পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : খাস কলকাতায় ফের খুন প্রতিবাদী, ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা। চারদিন কেটে গেলেও এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। একবালপুরে বাড়ির সামনে মদের আসরের প্রতিবাদ করায় খুন। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আমজাদ এখনও ফেরার। পুলিশের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের যোগসাজশের অভিযোগে সরব স্থানীয়রা। পুলিশে অভিযোগ জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, দাবি এলাকাবাসীর। গত ৮ সেপ্টেম্বর, একবালপুর লেনে বাড়ির সামনে মদের আসরের প্রতিবাদ করায় যুবককে মারধর। গতকাল হাসপাতালে মৃত্যু ধনরাজ প্রসাদের। 

মৃতের স্ত্রী পূজা প্রসাদ জানিয়েছেন, আমজাদ এবং আরও চারজন তাঁদের জানলার পাশে বসে মদ খাচ্ছিলেন এবং গালিগালাজ করছিল। ধনরাজ তাদের বারণ করেন। বলেন, সারাদিন পরিশ্রম করে এসে একটু ঘুমাচ্ছে। ধনরাজ এও বলেছেন বাড়িতে তাঁর অসুস্থ বাবা রয়েছেন। এই কথার পরেই মদের আসর থেকে উঠে প্রকাশ্য রাস্তায় জনবহুল এলাকায় চপার দিয়ে ধনরাজ প্রসাদকে কোপানো হয়। বছর ৩৭- এর এই যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। চারদিন কেটে গেছে, এখনও একজনও গ্রেফতার হয়নি। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে মৃতের পরিবার। ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা। এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। 

প্রকাশ্যে মদ্যপান, তার প্রতিবাদ করায় খুন হতে হল একজনকে, এত সাহস আসছে কোথা থেকে?

স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশকে জানালে পুলিশই অভিযুক্তদের খোঁজ দিয়ে দেবে যে কে বা কারা তাদের নামে অভিযোগ দায়ের করেছে। এছাড়াও এলাকাবাসীরা বলছেন, প্রকাশ্যেই এখানে চলে মদ্যপান। রাস্তার উপরেই বসে মদের আসর। ড্রাগের কারবার চলে বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন অনেকেই। আর তার প্রতিবাদ করলে হয়তো ঘটনা ধনরাজ প্রসাদের সঙ্গে ঘটা ঘটনার মতোই কিছু। ক্ষোভের পাশাপাশি আতঙ্কেও রয়েছেন স্থানীয়রা। 

ধনরাজের স্ত্রী এও অভিযোগ করেছেন ঘটনার দিন দুষ্কৃতীদের কাছে পিস্তলও ছিল। ধনরাজের ভাইয়ের পেটে পিস্তলও ঠেকায় দুষ্কৃতীরা। অন্যদিকে, জানা গিয়েছে, চপার দিয়ে রাস্তার উপরেই ক্রমাগত কোপানো হয় ধনরাজ প্রসাদকে। ঘাড়ে মারা হয় কোপ। গুরুতর জখম অবস্থায় ধনরাজকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তাদের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও, এখনও পর্যন্ত একজনকেও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আর গুরুতর জখম অবস্থায় ধনরাজকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে অবশেষে হার মানতে বাধ্য হয়েছেন বছর ৩৭- এর ওই যুবক।