আবির দত্ত, হিন্দোল দে, কলকাতা : লালবাজারে গেলেন যাদবপুরে মৃত ছাত্রীর বাবা। লালবাজারে গিয়ে পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা অনামিকা মণ্ডলের বাবা। 'এটা দুর্ঘটনা নয়, খুনের ঘটনা', গতকাল এবিপি আনন্দকে জানিয়েছিলেন মৃত ছাত্রীর বাবা। তারপরই এদিন লালবাজারে গেলেন তিনি। কীভাবে মৃত্যু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর? পড়ে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু? না খুন? সমস্ত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে ঠিক কী ঘটেছিল? জানতে আজ ফের তলব অনামিকার ৩ বন্ধুকে। ইতিমধ্যেই অনামিকার মোবাইল ফোন হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এর পাশাপাশি পুলিশের হাতে এসেছে সিসি ফুটেজও। ইতিমধ্যেই অনামিকার মোবাইল হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। মৃতার বাবা বলেছেন, কাদের সঙ্গে অনামিকার কথা হত, কী কথা হত, তা পুলিশ জানার চেষ্টা করুক।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসের মধ্যেই রহস্যমৃত্যু হয়েছে ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অনামিকা মণ্ডলের। পরিবারের আশঙ্কা এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়। খুন করা হয়েছে তাঁদের মেয়েকে। আজ লালবাজারে গিয়েছেন মৃতার বাবা। অনামিকা কি এমনিই জলে পড়ে গিয়েছিলেন? নাকি কেউ তাঁকে ধাক্কা দিয়েছিল? তদন্তে পুলিশ। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক। এছাড়াও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরাও ঘটনাস্থলে যান। ঠিক কীভাবে মৃত্যু হয়েছে অনামিকার, তা নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে এখনও। এর মধ্যেই লালবাজারে পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন মৃতার বাবা। গতকাল অনামিকার বাবা জানিয়েছিলেন, তাঁর মেয়ে অন্ধকারে ভয় পায়। পোকামাকড়ে ভয় ছিল অনামিকার। তাই তাঁর মেয়ে একা ওভাবে অন্ধকারে যাবেন না। মেয়েকে খুন করা হয়েছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
জানা যাচ্ছে, সোমবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ পরিবারের কয়েকজনকে নিয়ে লালবাজারে আসেন অনামিকার বাবা। সূত্রের খবর, তিনি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছেন। প্রায় ২ ঘণ্টার উপর অনামিকার বাবা ও পরিবারের লোকেরা ছিলেন লালবাজারে। পুলিশ কমিশনারকে তাঁরা গোটা বিষয়টা জানিয়েছেন বলেও খবর। অনামিকাকে কেউ ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে মৃতার বাবা এবং পরিবারের অন্যান্যদের। পুলিশ সূত্রে খবর, তারা অনামিকার পরিবারের থেকে সবকিছু শুনেছে। পরবর্তীতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা পুলিশ জানাবে অনামিকার পরিবারকে। কেন ওই ছাত্রীর মৃত্যু হল, তা জানতে জোরকদমে তদন্ত করছে পুলিশ।
অনামিকার ৩ বন্ধুকে আজ যাদবপুর থানায় তলব করেছে পুলিশ। ঘটনার দিন তাঁরা ছিলেন অনামিকার সঙ্গে, এমনটাই খবর পুলিশ সূত্রে। কীভাবে সেদিন অনামিকা পুকুরের পাশে গেলেন, তাঁকে শেষ কখন দেখা গিয়েছিল, ঘটনাস্থলে আর কাউকে দেখা গিয়েছিল কিনা, অনামিকার কোনও মানসিক অবসাদ ছিল কিনা, তিনি নিজেই জলে পড়ে গিয়েছিলেন, নাকি কেউ তাঁকে ঠেলে ফেলে দিয়েছিল, এই ধরনের প্রশ্ন অনামিকার বন্ধুদের করা হতে পারে বলে অনুমান। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।