কলকাতা: 'বঞ্চিত যোগ্য প্রার্থীরা (Job Seekers) ফলের আশায় বসে আছেন। তাঁরা জানতে চান না সিবিআই (CBI) কী করল ? স্কুল সার্ভিস কমিশন কী করল ? তাঁরা চায় নিয়োগপত্র', স্পষ্ট করলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু (Justice Biswajit Basu)। মূলত আজই OMR শিট সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার কথা সিবিআই-র (CBI)। এহেন মুহূর্তে, আদালতে সওয়ালের পর, 'দুর্নীতিতে যুক্তদের কাউকে ছাড়া হবে না’, বলে হুঁশিয়ারি বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। 


'তাঁরা জানতে চান না সিবিআই কী করল ? স্কুল সার্ভিস কমিশন কী করল ? তাঁরা চায় নিয়োগপত্র'


এখনও পর্যন্ত ২১ হাজার পদে দুর্নীতি হয়েছে। তার মধ্যে ৯ হাজার ওএমআর শিট বিকৃতি করা হয়েছে। মূল প্যানেল থেকে ওয়েটিং লিস্ট, সর্বত্র দুর্নীতি হয়েছে। হাইকোর্টে গ্রুপ-ডি নিয়োগ দুর্নীতির একটি মামলায় দাবি করলেন সিবিআইয়ের সিট প্রধান। 'যে যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছেন তাঁরা শুধু ফলের আশায় বসে আছেন।তাঁরা জানতে চান না সিবিআই কী করল ? স্কুল সার্ভিস কমিশন কী করল ? তাঁরা চায় নিয়োগপত্র।' বললেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।


সিট প্রধান শেনভি আদালতে সওয়াল করেন যে, ‘গত নভেম্বর থেকে শুধু র‍্যাঙ্ক জাম্পিংয়ের অভিযোগের তদন্ত হচ্ছিল। গাজিয়াবাদ থেকে হার্ড ডিস্ক উদ্ধারের পর ওএমআর শিটের বিষয়টি সামনে আসে। আমরা সব নথি এসএসসিকে দিয়েছি। এখন তাদের ঠিক করতে হবে তারা কী ভাবে ত্রুটি সংশোধন করবে’। সওয়ালের পর বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর হুঁশিয়ারি,‘জল থেকে কাদা সরিয়ে জলটাকে স্বচ্ছ করুন,যা সাহায্য লাগবে আদালত করতে করবে। এই দুর্নীতির শেষ দেখা দরকার। এই দুর্নীতিতে যুক্তদের কাউকে ছাড়া হবে না।' 


১৮৩ জনের পর নবম-দশমে বেআইনিভাবে চাকরি


১৮৩ জনের পর নবম-দশমে বেআইনিভাবে চাকরি (Job Scam) পাওয়া আরও ৪০ জনের হদিশ মিলল। সূত্রের খবর, OMR শিটে কারচুপি করেই ৪০ জনকে চাকরির সুপারিশ করেছিল SSC। আজ, OMR শিট সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার কথা সিবিআই-র (CBI)। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে বৃহস্পতিবার, নবম-দশমে বেআইনি ভাবে নিয়োগ পাওয়া ১৮৩ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। এবার, নবম-দশমে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া আরও ৪০ জনের হদিশ মিলল। সূত্রের খবর, OMR শিটে কারচুপি করেই ৪০ জনকে চাকরির সুপারিশ করেছিল SSC। সব মিলিয়ে, এই নিয়ে নবম-দশমে ২২৩ জন বেআইনিভাবে চাকরিপ্রাপকের হদিশ মিলল। সম্প্রতি, নবম-দশমে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে উঠে আসে OMR শিটের প্রসঙ্গ।


আরও পড়ুন, G-20 সম্মেলনের প্রস্তুতি-বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি গেলেন মমতা, মোদির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎ কি হবে?


এরপরই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, গাজিয়াবাদ এবং কমিশনের দফতর থেকে বাজেয়াপ্ত করা হার্ডডিস্ক থেকে OMR শিটের যে নমুনা উদ্ধার হয়েছে, তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবে CBI। নিয়োগ দুর্নীতির রহস্যের জট খুলতে OMR শিট নিয়ে, শুক্রবার করুণাময়ীতে SSC’র দফতরে বৈঠকে বসে CBI, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও মামলাকারীর আইনজীবী। সূত্রের খবর, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ওই বৈঠকে, CBI তদন্তে উঠে আসা নবম ও দশমের ৪০টি OMR শিটের নমুনা নিয়ে আলোচনা হয়। এই ৪০ জনের মধ্যে ২০ জন প্যানেলভুক্ত। বাকি ২০ জন ওয়েটিং লিস্টে ছিলেন। তবে, সকলেই সুপারিশপত্র পেয়েছিলেন।


OMR-এ কারচুপি করে প্যানেলে নাম তোলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু, ওই ৪০ জনের সুপারিশ কি স্কুল সার্ভিস কমিশন করেছিল? ৪০ জনই কি মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন? তাঁরা কি চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন? চাকরিতে যোগ দিয়ে থাকলে, তাঁরা কোন কোন স্কুলে কর্মরত রয়েছেন? বৈঠকে এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা হয়। সূত্রের খবর, সেখানে জানা যায়, ৪০ জনের মধ্যে বাংলার শিক্ষক রয়েছেন ২১ জন। ইতিহাসের ১০ জন। জীবন বিজ্ঞানের ৩ জন। ইংরাজির শিক্ষক রয়েছেন ৪জন। ভৌতবিজ্ঞান ও ভূগোলের শিক্ষক রয়েছেন ১ জন করে। সোমবার, OMR শিট সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেবে সিবিআই।