কলকাতা: মোমিনপুরের ময়ূরভঞ্জ রোডে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ, ঘটনায় '৪৮ ঘণ্টা ধরে' উত্তপ্ত এলাকা। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসার জেরে চলে বোতল ছোড়াছুড়ি থেকে ইটবৃষ্টিও। উত্তেজনা ছড়ায় ওয়াটগঞ্জ ও একবালপুর থানা এলাকায়। একবালপুর থানা ঘেরাও করে উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এলাকায় মোতায়েন বিশাল পুলিশ বাহিনী। ঘটনাস্থলে যেতে চাওয়ায় গ্রেফতার হন সুকান্ত মজুমদার। মোমিনপুরকাণ্ডে (Mominpore) সুকান্ত আটক হতেই এদিন লালবাজারের সামনে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রতিবাদ জানান তিনি। পাশাপাশি সেলিমকেও কটাক্ষ করেন মোমিনপুর ইস্যুতে। এরপরেই মোমিনপুর ছাড়াও একাধিক ইস্যুতে রাজ্যের শাসকদল-সহ শুভেন্দুকে তোপ দাগলেন বাম নেতা মহম্মদ সেলিম।   


প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরুপাচারকাণ্ডে তোলপাড় রাজ্য। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (এই প্রতিবেদনটিতে শুভেন্দু অধিকারী গ্রেফতার হয়েছেন বলে অনিচ্ছাকৃত একটি ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল। যে ভুলের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী), অনুব্রত মণ্ডল-সহ আরও একাধিক জন। মামলায় নাম জড়িয়েছে শাসকদলের আরও অনেকের। এদিকে আজকেই সামনে এসেছে শতাব্দী ইস্যুও। গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে চার্জশিটে শতাব্দী রায়কে সাক্ষী করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।সূত্রের খবর, চার্জশিটে সাক্ষী হিসেবে তৃণমূল সাংসদের নাম রয়েছে ৪৬ নম্বরে। এনিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। শুভেন্দু অধিকারী আজ বলেন, 'মহম্মদ সেলিম সাহেব সাংবাদিক সম্মেলন হয়েছে ? একবার মোমিনপুরে ইনসাফ সভা হবে না ?'। এরপরেই শাসকদল-সহ শুভেন্দু অধিকারীকে পাল্টা নিশানা করেন বাম নেতা মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, 'যেহেতু দুর্নীতি ইস্যুতে চোর ধরতে বলছি, তাই সব চোরের জ্বালা ধরেছে। তৃণমূলে বেশি চোর, যেমন জ্বালা ধরেছে, পাশাপাশি তৃণমূলের যে চোর পালিয়ে বিজেপিতে গিয়েছে, তাঁরও জ্বালা ধরেছে।'


আরও পড়ুন, ' শকুনের রাজনীতি করছে বিজেপি', মোমিনপুরকাণ্ডে বিস্ফোরক কুণাল


অপরদিকে বাম নেতা মহম্মদ সেলিম আরও বলেন, আমরা গোটা দেশে যেমন দেখেছি, গুজরাটে, রাজস্থানে, মধ্যপ্রদেশে,  খোদ দিল্লিতে, উত্তরপ্রদেশে যা ঘটেছে, আজকে এখানে তাই ঘটছে।  রথ যাত্রার সময়, গুজরাটে যেমন দেখেছি, রাজস্থানে, মধ্যপ্রদেশে, উত্তরপ্রদেশের পর এবার পশ্চিমবঙ্গে অ্যাকশন রিপ্লে হল ! গোটা রাজ্যের মানুষ দাঙ্গার জন্য প্রস্তুত না। তাই দুর্নীতি নিয়ে অনেক বড় প্রশ্ন, তা যে ঝাণ্ডা নিয়েই করুক !প্রসঙ্গত, বাইশের শুরুতে বিজেপি নেত্রী নুপুর শর্মার একটি সাক্ষাতকারে হজরত মহম্মদ নিয়ে বক্তব্য়ে সারাদেশে বিতর্কের ঝড় ওঠে। যার জেরে উত্তাল হয় একাধিক রাজ্য। হিংসা এতটাই ছড়িয়ে পড়ে যে, নৃশংসার মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। প্রভাব পড়ে পশ্চিমবঙ্গেও। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করেও, হিংসা রুখতে রীতিমত কালঘাম ছোটে প্রশাসনের। আর এবার ফের পুজোর মরশুমে এহেনকাণ্ডে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতেই মুখ খুললেন সজল, সেলিমরা।