কলকাতা: কুড়মিদের রেল ও সড়ক অবরোধ পড়ল পঞ্চম দিনে (Rail Blockade)। মালগাড়ি ও লরিতে শাকসবজি পচে একাকার। যোগাযোগ ব্যবস্থা থমকে চরম ভোগান্তি যাত্রীদের। দুর্ভোগের ১০০ ঘণ্টা পার! পুরুলিয়ার কুস্তাউর ও পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলি স্টেশনে রেল অবরোধ অব্যাহত। খেমাশুলিতে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কেও চলছে অবরোধ। অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কে ট্রাক, লরি, বাসের কয়েক কিলোমিটার লম্বা লাইন। চরম ভোগান্তির শিকার সাধারণ মানুষ। এহেন পরিস্থিতিতেই প্রতিক্রিয়া দিয়ে রাজ্য সরকারকে তোপ দাগেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বলেন, 'কুড়মিদের ইন্ধন জোগানো হচ্ছে। রাস্তা আটকে দেওয়া হয়েছে।যারা ওদের রাস্তায় নামিয়েছিল, তাদের এখন সরে গেছে। কেন্দ্র বিষয়টা দেখছে।' কুর্মি-বিক্ষোভ (Kurmi Agitation) নিয়ে এভাবেই রাজ্য সরকারকে নিশানা দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh)। আর এই ইস্যুতে এবার প্রতিক্রিয়া দিলেন তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন (Santanu Sen)।


শান্তনু সেন বলেন, নিজের দলে কোণ ঠাসা দিলীপ ঘোষ এসব বলে একটু নাম্বার বাড়াতে চাইছেন। কুড়মি এই ইস্যু , ভাষার স্বীকৃতি এবং তাঁদের এসটি-তে ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি বহুদিন। এবং এটা রাজ্য সরকার যথেষ্ট সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেখেছে। মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়টা আগে তুলেওছিলেন।  কেন্দ্রীয় সরকারের সার্বিক উদাসিনতার কারণে আজকে এই পরিস্থিতি। আজকে তাঁরা কখনও এসসি, এসটি, বা পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের জন্য কিছু করেননি। তারা ভোটের জন্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের একজনকে রাষ্ট্রপতি করে। রাষ্ট্রপতি মননোয়ন দেওয়ার পর, তাঁর বাড়ির সামনে লাইটের পোল বসে। এরপরে তিনি ধর্ষণ ইস্যুও তুলে কেন্দ্রের নিরাপত্তাহীনতাকেও তুলে ধরেন শান্তনু সেন।


আরও পড়ুন, 'আমার যাবার সময় হল, দাও বিদায়', ফেসবুকে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজার


প্রসঙ্গত, টানা পাঁচ দিন ধরে চলছে আন্দোলন। যার জেরে চরম ভোগান্তি বিস্তৃত এলাকায়। কাঁচামাল, খাদ্য বস্তু তো বটেই, পাশাপাশি গন্তব্যে পৌছানো নিয়ে চরম যন্ত্রনার শিকার পশ্চিমাঞ্চল। পুরুলিয়ার কুস্তাউর, পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে রেল অবরোধ। পাশাপাশি আটকে দেওয়া হয়েছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। ঝাড়গ্রামের লোধাশুলিতেও ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে শুরু হয়েছে অবরোধ। চূড়ান্ত ভোগান্তি সাধারণ মানুষের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা তাঁদের। একই সঙ্গে বাইরে থেকে যে সব কাঁচামাল আসে, সে সবও রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফলে সেগুলিও নষ্ট হচ্ছে। বাংলা থেকে অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা যাওয়ার অন্যতম মাধ্যম এই ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। সেই রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় ব্যবসা বাণিজ্য প্রায় বন্ধ হওয়ার জোগাড়। এমন জায়গায় জাতীয় ড়কের ওপর দাঁড়িয়ে কয়েক হাজার লরি, ট্রাক.. পণ্যবাহী গাড়ি।  এই অবস্থায় খিদে পেলে কোথাও যাওয়ার উপায় নেই। কোথায় পাবেন পানীয় জলটুকু, জানেন না দীর্ঘপথ পেরিয়ে আসা এই লরি চালকরা।