কলকাতা: করুণাময়ীতে জোর করে  ২০১৪-র টেট প্রার্থীদের অনশন আন্দোলন ভেঙে দিতেই সরব বিরোধীরা। উল্লেখ্য, রাত বাড়তেই তেতে উঠছিল পরিস্থিতি (TET Agitation)। একদিকে আন্দোলনের ঝাঁঝ যেমন বাড়াচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। তেমনই জমায়েত তুলতে সক্রিয়তা বাড়াচ্ছিল পুলিশও (Police)। শেষমেশ মধ্যরাতে সল্টলেকের করুণাময়ী থেকে আন্দোলনকারীদের তুলে দেয় পুলিশ। পুলিশি অভিযান নিয়ে বিরোধীদের বক্তব্য, 'কোর্টের নির্দেশকেই কার্যত ব্যবহার করে পর্ষদ এবং রাজ্য প্রশাসনকে আন্দোলন সরানোর হাতিয়ার যুগিয়েছে। তাই তড়িঘড়ি। বিরোধীরা আরও বলছেন, এটা অনৈতিক, বর্বরোচিত আক্রমণ পুলিশের।' এই ইস্যুতেই এদিন প্রতিক্রিয়া দিলেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন।


এদিন শান্তনু সেন বলেন, গণতন্ত্রের একটি অন্যতম স্তম্ভ, জুডিশিয়ারি। এই জুডিশিয়ারি নির্দেশ মানা কি অন্যায় ? নাকি আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়াটা অন্যায় ? যা আন্দোলন করছেন, তাঁদের প্রতি পূর্ণ সংবেদনশীলতার সঙ্গেই বলছি, আইন তো কখনও হাতে নিয়ে নেওয়া যায় না। আমরা তো বারংবার দেখেছি পুলিশ কীভাবে অনুরোধ করেছেন তাঁদেরকে, যে এখানে ১৪৪ জোন করা আছে। এখানে অনুগ্রহ করে আপনারা বসবেন না। আসলে সমস্যাটা তো অন্য জায়গায়। মুখ্যমন্ত্রী যখন সমাধান করার চেষ্টা করছেন, তখন বিরোধীরা তাঁদের মাংসওয়ালা, ঘুগনিওয়ালা  ক্যাডারদের চাকরি প্রার্থী হিসেবে পাঠিয়ে দিচ্ছে।' প্রসঙ্গত, একদিকে যখন এসএসসি দুর্নীতি চলছে, রাজপথে চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন হচ্ছে, ঠিক সেই সময় রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসংস্থানের পরামর্শকে কটাক্ষ করে গেরুয়াশিবির। বিধানসভার সামনে বিজেপি নেতারা ঝালমুড়ি, ঘুঘনি বিক্রি করেন। মূলত গতকাল বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা করেন সুকান্ত মজুমদার, এবং সেই ইস্যুতেও কটাক্ষ করেন শান্তনু সেন।


বৃহস্পতিবার রাতে সময় যত এগোচ্ছিল, ততই পুলিশের ভিড় বাড়ছিল করুণাময়ীতে। প্রিজন ভ্যানও এসে পৌঁছয় একে একে। এর পর মাইকিং শুরু করে পুলিশ। বলা হয়, আন্দোলনকারীদের জমায়েত। দুই মিনিট সময় দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে না উঠলে, উঠিয়ে দেওয়া হবে। সেই মতোই মধ্যরাতে তুলে দেওয়া হয় আন্দোলনকারীদের। আন্দোলনকারীদের হাত ধরে টেনে তুলে দেয় পুলিশ। তাতে দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি বেধে যায়। বেশ কয়েক জন চোট পান বলেও অভিযোগ। আন্দোলনকারীদের তিনটি প্রিজন ভ্য়ানে তোলা হয়। অসুস্থ এক আন্দোলনকারীকে তোলা হয় অ্যাম্বুলেন্সে।


আরও পড়ুন, 'মানুষ এই দুর্নীতিপরায়ণ সরকারকে ছুঁড়ে ফেলবে', টেট প্রার্থীদের আন্দোলন ভাঙতেই বিস্ফোরক সুকান্ত


'আমরা কি চোর?', 'শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার মাঝে রাতের অন্ধকারে পুলিশ কেন তুলে দিল?'-র মতো প্রশ্নের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা হওয়া সত্বেও কীভাবে রাতের অন্ধকারে মহিলা চাকরিপ্রার্থীদের এভাবে জোর করে তুলে দেওয়া হয়, সেই প্রশ্নও তুললেন আন্দোলনকারীরা। রাগে-ক্ষোভে ফেটে পড়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র ব্যঙ্গের সুরে কেউ কেউ বললেন, 'আমাদের ন্যায্য চাকরি ঘুষের টাকায় বিক্রি করে দিয়ে পুলিশ দিয়ে জোর করে মধ্যরাতে তুলে দিচ্ছে আমাদের।'এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ থেকে ফেরার পর টেট উত্তীর্ণদের আন্দোলন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বিশেষ কিছু না বললেও, ইঙ্গিতপূর্ণ একটি কথা বলেন  মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি বললাম না, আমি এসব নিয়ে কিছু বলব না। আমি বললাম, যা বলার ব্রাত্য বলবে। কারণ, আমি তো জানি না ডিটেলস্।'