কলকাতা:  করুণাময়ীতে জোর করে  ২০১৪-র টেট প্রার্থীদের অনশন আন্দোলন ভেঙে দিতেই কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাত বাড়তেই তেতে উঠছিল পরিস্থিতি (TET Agitation)। একদিকে আন্দোলনের ঝাঁঝ যেমন বাড়াচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। তেমনই জমায়েত তুলতে সক্রিয়তা বাড়াচ্ছিল পুলিশও (Police)। শেষমেশ মধ্যরাতে সল্টলেকের করুণাময়ী থেকে আন্দোলনকারীদের তুলে দেয় পুলিশ। আন্দোলনকারীদের জনাময়েত বেআইনি বলে ঘোষণা করা হয় প্রথমে। তারপর সময় দেওয়া হয় দুই মিনিট। তাতে আন্দোলনকারীরা না সরাতে কার্যত টেনেই তুলে দেওয়া হল সকলকে। আর এই ইস্যুতেই এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুললেন সুকান্ত মজুমদার। 


ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে বলেন, 'ভয়ানক দৃশ্য। চাকরি প্রার্থীদের উপর নির্মম অত্যাচার, গোটা বাংলা দেখছে। আজ যেভাবে পশ্চিমবঙ্গের লেডি হিটলার মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে লেলিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের ধর্ণামঞ্চ ভাঙলেন, ঠিক একইভাবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ঘাড় ধাক্কা দিয়ে এই ফ্যাসিস্ট দুর্নীতিপরায়ণ সরকারকে চেয়ার থেকে ছুঁড়ে ফেলবে। সময় ঘনিয়ে এলেই স্বৈরাচারীদের বলপ্রয়োগ বৃদ্ধি পায়। বাংলার মানুষ সবকিছুর সাক্ষী থাকলো।' প্রসঙ্গত, সম্প্রতি তিনি চাকরি ইস্যুতে আরও বলেন,' চাকরিপ্রার্থী যারা বসে আছেন তাদের কাছে কেষ্টর একটি ভিডিও তৈরি করে নিয়ে আসুন যে কিভাবে কোটিপতি হওয়া যায় তাহলে আর তারা কেউ চাকরি চাইবে না। টিউশন পড়িয়ে মাসে কয়েক হাজার টাকা ইনকাম করা যায়?? কিন্তু এক মন্ত্রীর মেয়ে টিউশন পড়িয়ে ব্যাংকে তিন কোটি টাকা রোজগার করেছে। ভাবুন কি ট্যালেন্টেড !' 


বৃহস্পতিবার রাতে সময় যত এগোচ্ছিল, ততই পুলিশের ভিড় বাড়ছিল করুণাময়ীতে। প্রিজন ভ্যানও এসে পৌঁছয় একে একে। এর পর মাইকিং শুরু করে পুলিশ। বলা হয়, আন্দোলনকারীদের জমায়েত। দুই মিনিট সময় দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে না উঠলে, উঠিয়ে দেওয়া হবে। সেই মতোই মধ্যরাতে তুলে দেওয়া হয় আন্দোলনকারীদের। আন্দোলনকারীদের হাত ধরে টেনে তুলে দেয় পুলিশ। তাতে দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি বেধে যায়। বেশ কয়েক জন চোট পান বলেও অভিযোগ। আন্দোলনকারীদের তিনটি প্রিজন ভ্য়ানে তোলা হয়। অসুস্থ এক আন্দোলনকারীকে তোলা হয় অ্যাম্বুলেন্সে।


আরও পড়ুন, '৩ জনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না', পুলিশ করুণাময়ী থেকে তুলে দেওয়ার পর অভিযোগ ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণদের


'আমরা কি চোর?', 'শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার মাঝে রাতের অন্ধকারে পুলিশ কেন তুলে দিল?'-র মতো প্রশ্নের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা হওয়া সত্বেও কীভাবে রাতের অন্ধকারে মহিলা চাকরিপ্রার্থীদের এভাবে জোর করে তুলে দেওয়া হয়, সেই প্রশ্নও তুললেন আন্দোলনকারীরা। রাগে-ক্ষোভে ফেটে পড়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র ব্যঙ্গের সুরে কেউ কেউ বললেন, 'আমাদের ন্যায্য চাকরি ঘুষের টাকায় বিক্রি করে দিয়ে পুলিশ দিয়ে জোর করে মধ্যরাতে তুলে দিচ্ছে আমাদের।'এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ থেকে ফেরার পর টেট উত্তীর্ণদের আন্দোলন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বিশেষ কিছু না বললেও, ইঙ্গিতপূর্ণ একটি কথা বলেন  মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি বললাম না, আমি এসব নিয়ে কিছু বলব না। আমি বললাম, যা বলার ব্রাত্য বলবে। কারণ, আমি তো জানি না ডিটেলস্।'