কলকাতাঃ অনুব্রত-র বাড়িতে চিকিৎসক পাঠানোর ইস্যুতে এবার বিস্ফোরক সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty)। কার নির্দেশে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) বাড়িতে চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীকে  (Chandranath Adhikari) পাঠিয়েছিলেন সুপার, ,সেই প্রশ্নের উত্তরে বিস্ফোরক দাবি করছেন বোলপুর হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু। সিউরির তৃণমূল বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরি নির্দেশেই তিনি অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পাঠান চিকিৎসক। যদিও এই  অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ওই তৃণমূল বিধায়ক। তিনি দাবি করেন, অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িথেকেই ফোন এসেছিল। এরপরেই মুখ খুললেন বামনেতা সুজন চক্রবর্তী।


অনুব্রত ইস্যুতে এদিন তিনি বলেন, এখন হাল খারাপ। এতদিন যারা দাপট নিয়ে কথা বলতেন, বডি ল্যাঙ্গুয়েজেই বোঝা যেত যেনও দুনিয়া তাঁদের কবজায়। এখন সবাই একে ওকে ঠেলছেন। কেউ ঘাড়ে দায়িত্ব নিচ্ছেন না। ডাক্তারের কথাতে বোঝা গেল, তিনি বুঝছেন, প্রভাবশালী। তার সুপার তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন। অতয়েব তাঁকে যেতে হবে। সুপার কে, নির্দেশ দেবার। সরকারি হাসপাতালে বেআইনি কাজ।  সুপার নিজের বাঁচার জন্য বলছেন এখন বিকাশ রায় চৌধুরি। বিকাশ রায় চৌধুরি কার নির্দেশ করেছেন ? বিকাশ রায় চৌধুরি বলেছেন 'আমি আবেদন করেছি।' কিন্তু আপনি আবেদন করলেন কেন ? আপনি কি স্বাস্থ্য মন্ত্রী, আপনি কি স্বাস্থ্য মন্ত্রীর অনুমতি নিয়েছেন ? প্রশ্ন তুলে এরপরে স্বাস্থ্যমন্ত্রককেই তোপ দাগেন বাম নেতা। 


মূলত রাজ্যের শাসকদলের এই হেভিওয়েট নেতা অনুব্রত মন্ডলের উপরে ঝুলছে গরুপাচার মামলার তদন্ত। নাম জড়ানোর পর এখন অবধি অসংখ্য বার তিনি ইডি-সিবিআই-র হাজিরা এড়িয়েছেন। কখনও বীরভূমের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসানসোল হয়ে কলকাতা আসার পথে নিজাম প্যালেসের গা ঘেষে বেরিয়ে যান তিনি। এর আগে সিবিআই তলবের পর বুকে হাত দিয়ে তাঁকে বেরোতে দেখা গিয়েছে। তারপর সোজা গিয়ে ভর্তি হয়েছেন  এসএসকেএম-এ। তবে এসএসসি দুর্নীতি মামলায় তলব এড়িয়ে কিছুতেই যাতে এসএসকেম-এ না যেতে পারেন, তার জন্য পার্থ ইস্যুতে আগেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সিবিআই। তারপরেই এসএসকেএম-র উডবার্ণ-এ এখন আর চাইলেই ভর্তি হওয়া যাবে না, স্পষ্ট বলে জানায় হাইকোর্ট। আর এবার তাই চেয়েও আর এসএসকেএম-এ ভর্তি পারেননি অনুব্রত। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছে হাসপাতাল। এদিকে তারই মাঝে অনুব্রত-র বাড়িতে চিকিৎসক পাঠানোর ইস্যুতে বিতর্কের ঝড়।


গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতারের পর এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-র নজরে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু। এই মুহূর্তে দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদের সম্ভাবনা রয়েছে। মূলত এর আগে চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর বয়ান রেকর্ড করে সিবিআই। সরকারি চিকিৎসক দাবি করেছেন, সুপারের নির্দেশেই তিনি অনুব্রতর বাড়িতে গিয়ে সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশন লিখে দেন। যা নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। গতকাল বোলপুরের সরকারি চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর বয়ান রেকর্ড করে সিবিআই। চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়ে বয়ান রেকর্ড করেন আধিকারিকরা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের ৩ প্রতিনিধির একটি দল যায় চিকিৎসকের বাড়িতে । যদিও তিনি বলেছেন, 'আগে যা বলেছিলাম, সিবিআই-কেও তাই বলেছি।'