কলকাতা: পুরুলিয়ায় শিক্ষক নিয়োগে, জেলা ভিত্তিক কোটা ইস্যুতে মমতার মন্তব্য ঘিরে প্রশ্ন তুললেন বামেদের বর্ষীয়ান নেতা সুজন চক্রবর্তী। মূলত 'কেন পুরুলিয়ার ছেলেমেয়েরা বঞ্চিত হবে ?' সম্প্রতি গতমাসের শেষে জনসভা থেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  তিনি বলেন, 'পুরুলিয়ার টাকা কেউ একজন নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নিয়েছিলেন।  আমি নিজের উদ্যোগে পুরুলিয়ার ছেলেমেয়ের জন্য ব্যবস্থা করেছি।' আর তারপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তুলেন সুজন চক্রবর্তী। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, 'নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। সেখানে জেলার কোটার প্রশ্ন থাকবে কী করে ?'



সম্প্রতি জনসভা গিয়ে তিনি বলেন, 'আমার মনে আছে পুরুলিয়ার এই ডাকাত গদ্দারেরা কেটে দিয়েছিল। পুরুলিয়ার কোটাটা নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নিয়েছিল। কীসের বিনিময়ে নাইবা বললাম।তারপর আমি বললাম সব জেলার কোটা থাকে।  ওরা কেন বঞ্চিত হবে।আমি কোটা বাড়িয়ে সব ব্যবস্থা করে দিলাম।  আমরা যদি চোর হই, তোরা তাহলে ডাকাত। ' আর ঠিক এই জায়গাটাই কোড করে প্রশ্ন তুলেছেন বামনেতা। সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, এতদিন মমতা বলে এসেছেন, তিনি দুর্নীতির কিছুই জানেন না। এখন ষ্পষ্ট স্বীকারোক্তি, সবটাই তিনি জানতেন। শুধু তাই নয়, প্রয়োজন মতো সেই অন্যায়ের অংশ হতে তিনি।


আরও পড়ুন, বাজেটের সুফল বোঝাতে ১২ দিন ধরে দেশজুড়ে প্রচার অভিযান চালাবে বিজেপি


মমতা ওই দিন আরও বলেন, রাজ্যে ৪০ শতাংশ বেকারের সংখ্যা কম হয়েছে। রাজ্যে ১০ হাজার জব কার্ড হোল্ডারদের কাজ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, তিনি আরও বলেন, 'বাংলায় নতুন করে প্রায় ৩৪ টি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে।  ৪৬টি নতুন কলেজের কাজ চলছে। ৪৬ টি মাল্টি সুপার হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। আমাদের আমলে প্রায় ১৪ নতুন মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হয়েছে।' প্রসঙ্গত, রাজ্যে এই মুহূর্তে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে শাসকদলের হেভিওয়েটদের। ইস্যুটি গতবছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই হাইকোর্টে গতি পেয়েছে। তদন্তে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু এতকিছু সত্ত্বেও রাজ্যে নতুন করে নিয়োগ কত, এই প্রশ্নটা বারবার উঠে আসছে। যার এখনও অবধি নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে চাকরি করছেন, তাঁদের জায়গায় প্রকৃত যোগ্য প্রার্থীদের কবে নিয়োগ হবে, এই প্রশ্নগুলি অবিরত চাকরি প্রার্থীরা করেই চলেছেন। আর এমন এক আবহে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেন,  'পুরুলিয়ার টাকা কেউ একজন নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নিয়েছিলেন।' স্বাভাবিকভাবেই এই কথা রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের ঝড় তুলেছে।