কলকাতা: দশমীর বিসর্জনের সময় বচসার জেরে এক পুলিশ কর্মীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল একটি পুজো কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে। গতকাল সন্ধেয় এই ঘটনা ঘটেছে শোভাবাজারের কাছে প্রসন্নকুমার ঘাটে। ওই পুলিশ কনস্টেবলের দাবি, পাথুরিয়াঘাটার এক পুজো কমিটি ঘাটে বিসর্জনের নিয়ম ভেঙে প্রতিমা বিসর্জন দিতে যায়। প্রতিবাদ করলে ওই পুলিশ কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। 


বিজয়া দশমীর রাতে পৃথক দুটি অশান্তির ঘটনায় প্রাণ গেল দু’জনের। হুগলির আরামবাগে বিসর্জন বিবাদে খুনের অভিযোগ উঠেছে এক নাবালককে! নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় সামান্য বিবাদে এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে।


তাঁদের পাড়ার ঘাটে কেন অন্য পাড়ার ঠাকুর বিসর্জন হবে? এই নিয়ে বিবাদে ধুন্ধুমার কাণ্ড আরামবাগের ডিহিবায়রা গ্রামে! সংঘর্ষে জড়ান ডিহিবায়রা মনসা মাতা মিলন সংঘ ও পানপাড়া দুর্গোৎসব কমিটির সদস্যরা। শেষ পর্যন্ত ওই ঘাটেই আরামবাগ থানার পুলিশের উপস্থিতিতে পানপাড়ার প্রতিমা বিসর্জন হয়। 


তখনকার মতো বিবাদ মিটে গেলেও, রাতে মনসা মাতা মিলন সংঘের পুজোমণ্ডপের অদূরে, রাস্তার ওপরে সাগর থান্ডার (১৭) নামে এক নাবালকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সাগর মনসা মাতা মিলন সংঘের সদস্য। পেশায় দিনমজুর। পরিবার সূত্রে খবর, তাঁর মাথায় গভীর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। সাগরকে ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। অভিযোগ মৃতের পরিবারের। 


মৃত নাবালকের জেঠিমা সুচিত্রা থান্ডারের কথায়, আমরা ২০ বছর ধরে পুজো করছি। ওরা এবার প্রথম পুজো করছে। বলেছিলাম আমরা এই ঘাটে বিসর্জন করছি। তোমরা ওই ঘাটে করো। তা নিয়ে গণ্ডগোল। ওকে বাড়ি থেকে ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়ে মাথায় কুড়ুল দিয়ে মেরেছে। যদিও পানপাড়া পুজো কমিটির সদস্যরা খুনের অভিযোগ মানতে নারাজ। 


পানপাড়া দুর্গোৎসব কমিটির সদস্য রঞ্জন পানের কথায়, এর সঙ্গে আমরা জড়িত নই। ছেলেটি অ্যাক্সিডেন্টে মারা গিয়েছে। অত দূর গিয়ে কেন মারতে যাব? ওরাই আমাদের বিসর্জনে বাধা দেয়। আমাদের লোকেদের মারধর করে। দশমীর রাতে আরামবাগে যখন এই কাণ্ড


তখন নাকাশিপাড়ার আড়বেতাই গ্রামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে। মৃতের নাম সুকুমার সাঁতরা। তাঁর পরিবার সূত্রে খবর, বুধবার রাতে পাড়ার পুজোমণ্ডপে ছিলেন তাঁরা। সেখানে সুকুমারের ভাই ষষ্ঠী সাঁতরার মোবাইল ফোন হারিয়ে যায়। মোবাইল ফোন খোঁজার সময় পুজোমণ্ডপের মাইক বন্ধ করে দেন সুকুমার। তা নিয়ে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সঙ্গে শুরু হয় বিবাদ। পাড়ার ৫ জন যুবক সুকুমারকে বেধড়ক পেটায় বলে অভিযোগ। তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। 


বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকরা সুকুমার সাঁতরাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। নাকাশিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে সুকুমারের পরিবার। অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাতেই সঞ্জীব সাঁতরা নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেনাকাশিপাড়া থানার পুলিশ।