ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : 'অভিভাবকহীন' হওয়ায় সুস্থ হয়েও এসএসকেএম থেকে ছুটি হচ্ছে না ফিরোজের। গত ১৭ অগাস্ট খাস কলকাতার রবীন্দ্র সদনের কাছে রাস্তায় কয়েকজন দুষ্কৃতী জোর করে বিষ খাইয়ে দেয় দক্ষিণ দিনাজপুরের চোকিয়াপুকুরের বাসিন্দা ফিরোজ এসদানি ইসগা আলিকে। তিনদিন চিকিৎসার পরে তিনি সুস্থ। নিজেই হেঁটে-চলেও বেড়াচ্ছেন হাসপাতাল চত্বরে। কিন্তু পাচ্ছেন না বাড়ি ফেরার অনুমতি। কারণ, হাসপাতালের ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে সই লাগবে কোনও অভিভাবকের। ২৮ বছরের ফিরোজকে এমনটাই জানিয়েছেন চিকিৎসকা। দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে বৃদ্ধ বাবা-মা এই কাজের জন্য আসা সম্ভব নয় জানাতে চিকিৎসরা তাঁকে জানিয়েছেন স্থানীয় কোনও অভিভাবক সই করে দিলেও চলবে। তাহলেই মিলবে ছুটি। কিন্তু হাসপাতাল চত্বরে অনেকের সঙ্গে কথা বলে নিজের সমস্যার কথা জানালেও কেউ 'অভিভাবক' হয়ে এগিয়ে আসেননি ফিরোজের জন্য। তাই শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত বাড়ি ফেরার জন্য ছুটি পেতে অভিভাবকের খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের ফিরোজ।


হাসপাতাল চত্বরে অভিভাবকের খোঁজে ঘুরতে থাকা ফিরোজ বলেছেন, 'সবাই বলছে চিনি-জানি না এভাবে অভিভাবক হয়ে সই করে দিতে পারব না।' আবার অনেকে সমস্যার কথা শুনে প্রাথমিকভাবে সই করে দেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি জানালেও শেষপর্যন্ত সইটা করছেন না। কিছুদিন আগে কলকাতায় এসেছিলেন ফিরোজ। কিছু দৃষ্কৃতীর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানাতে। প্রথমে নবান্ন ঘুরে পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের অফিসে অভিযোগপত্র জমাও দেন। তবে ফেরার আগেই বিপত্তি। ফিরোজের কথায় 'দুষ্কৃতীরা পিছনে হাত বেঁধে জোর করে বিষ খাইয়ে দেয়। আমি চেঁচিয়ে উঠতে কয়েকজন এসে ধরে এসএসকেএমে এনে দেয়। পরে হেস্টিংস থানার পুলিশ এসে ভর্তি করে।'



শারীরিক ঝক্কি সামলে উঠলেও আপাতত নতুন সমস্যায় ফিরোজ। অভিভাবকহীন হওয়ায় সুস্থ হয়েও ফেরা হচ্ছে না বাড়ি। গোটা পরিস্থিতির মাঝে মানবিক কেউ এগিয়ে এসে ভিনজেলার অপরিচিত ফিরোজের স্থানীয় অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়ে তাঁকে বাড়ি ফেরার ছাড়পত্র জোগাড় করে দেন কি না, এখন সেই অপেক্ষা।