পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: ই-নাগেটস মোবাইল গেমিং অ্যাপ চক্রে শুধু ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ নয়, আরও কোটি কোটি টাকার হদিশ মিলল। কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) দাবি, বিদেশ থেকে স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমে চালানো হত প্রতারণা চক্র। গার্ডেনরিচের (Gardenreach) আমির খান একা নয়, উঠে আসছে আরও কয়েকটি নাম। এদেরই একজন বি কে পাল অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা শুভজিৎ শ্রীমানি। তিনি মোবাইল গেমিং অ্যাপ প্রতারণা চক্রের আরেক মাস্টারমাইন্ড বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ সূত্রে খবর, বছরখানেক ধরে দুবাইতে থাকেন শুভজিৎ। 


আমির খানকে জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য: অন্যতম পাণ্ডা আমির খানকে জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) হাতে। পুলিশ সূত্রে খবর, মোবাইল গেমিং অ্যাপ প্রতারণা চক্র অপারেট করা হত বিদেশ থেকে। অন্যতম মাস্টারমাইন্ড শুভজিৎ শ্রীমানি বছরখানেক ধরে দুবাইতে রয়েছেন। গতকাল তাঁর সল্টলেকের অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অফিসে লোক নেই, অথচ সার্ভার, কম্পিউটার চলছে। সবকিছুই স্বয়ংক্রিয়। পুলিশের দাবি, দুবাই, মালয়েশিয়ায় বসে গোটা সিস্টেম অপারেট করে চক্রের পাণ্ডারা। গেমিং অ্যাপের পাশাপাশি, বিভিন্ন ধরনের অনলাইন প্রতারণা চক্রও চালানো হত বলে পুলিশের দাবি। শুধু আমির খানের বাড়ি নয়, বেশ কিছু ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যাকাউন্ট থেকে উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি টাকা। 


গার্ডেনরিচ কাণ্ডে পুলিশের পরে এবার প্রায় ১৩ কোটি টাকার ক্রিপ্টোকারেন্সি উদ্ধার করল ইডি (Enforcement Directorate)। বুধবার আমিরের  প্রতারণার শিকড়ের খোঁজে ৩ জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। অন্যদিকে ৫টি জায়গায় তল্লাশি চালায় কলকাতা পুলিশ। গ্রেফতার ৪।


তল্লাশি পুলিশ-ইডির: ইডি ছুটছে। পুলিশ দৌড়চ্ছে। উদ্দেশ্য গার্ডেনরিচের সেই কীর্তিমান আমির খানের আরও কীর্তি ফাঁস করা! ই-নাগেটস গেমিং অ্যাপ প্রতারণায় টাকা শুধু টাকাই উদ্ধার হয়ে চলেছে! ১০ সেপ্টেম্বর ইডির অভিযানে আমিরের বাড়ির খাটের নীচ ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ED! এরপর আমির ধরা পড়ার পর আরও ১৪ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকার ক্রিপ্টোকারেন্সির হদিশ পায় কলকাতা পুলিশ! 


আর বুধবার ১২ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকার ক্রিপ্টোকারেন্সির খোঁজ পেল ED। আমিরের আমিরির আরও কত নমুনা আছে? তারই খোঁজে বুধবার আরও ৫টি জায়গায় অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশ। তার মধ্যে ই-নাগেটস্-অ্যাপের যোগসূত্রে, এদিন বিকেলে সেক্টর ফাইভে, ক্যুইক ব্লক-ই-কমার্স নামে এক সংস্থার অফিসে হানা দেয় পুলিশ। 

সেখানে ঢুকেই চোখ কপালে ওঠে অফিসারদের। দেখা যাচ্ছে, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সেগুলির সার্ভার - সব চলছে! অথচ একটিও লোক নেই! 
অফিসে তল্লাশি চালিয়ে ৩ হাজারের বেশি ডেবিট কার্ড ৪৮৩টি ব্যাঙ্ক কিট উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়াও ১৯৫২টি সিম কার্ড উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। 


পুলিশ সূত্রের খবর, এই অফিসে কাউকে না পাওয়া গেলেও, প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে জানা গেছে, বিদেশে বসে এই অফিসের সার্ভার নিয়ন্ত্রণ করা হত
এদিকে, আমির-কানেকশনে দিনভর তল্লাশি চালিয়ে, বিভিন্ন ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। তাদের জেরা করে প্রতারণা চক্রের আরও গভীরে যেতে চাইছেন তদন্তকারীরা।