সৌমিত্র রায়, কলকাতা: দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পর কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় (Presidency University)। গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে বিবিসি-র তথ্যচিত্র প্রদর্শন ঘিরে উত্তপ্ত প্রেসিডেন্সি (Gujarat Documentary)। বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর (SFI) উদ্যোগে তথ্যচিত্র দেখানোর সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার দেওয়ার অভিযোগ। তার প্রতিবাদেই বিক্ষোভে উত্তাল প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাস।
তথ্যচিত্র দেখানোর সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার দেওয়ার অভিযোগ
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, শুক্রবার প্রেসিডেন্সিতে বিবিসি-র গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্রটি দেখানো হচ্ছিল। কিন্তু মেরেকেটে আধ ঘণ্টা সেটি দেখতে পান তাঁরা। আচমকা কেউ বা কারা বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দিকেই অভিযোগের তির পড়ুয়াদের। কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের।
সেই নিয়েই এ দিন উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস চত্বর। এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে এসএফআই-এর সঙ্গে যুক্ত এক পড়ুয়া বলেন, "আমাদের অভইযোগ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বারং বার আমাদের বলা হয়েছে, কোনও সাহায্য মিলবে না। তার পর যখন স্ক্রিনিং শুরু করলাম, খানিক ক্ষণ পরই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হল।"
এ দিনের ঘটনায় রাজ্যের তৃণমূল সরকারকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। ওই পড়ুয়া বলেন, "উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, যে রাজ্য সরকার দাবি করে, তারা সংসদীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, বিজেপি-র বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে, তারা স্ক্রিনিং বন্ধ নিয়ে কোনও মন্তব্য করছে না। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, বাক স্বাধীনতা কতটা বিপন্ন, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।"
যদিও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া নিয়ে অন্য কথা বলছেন প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, ফিউজ উড়ে যাওয়াতেই বিপত্তি বাধে। তাতেই বিঘ্নিত হয় তথ্যচিত্রের প্রদর্শন। কিন্তু এসএফআই-এর দাবি, যত ক্ষণ পর্যন্ত না বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরে আসে, আবার তথ্যচিত্রের প্রদর্শন শুরু হয়, তত ক্ষণ পর্যন্ত ডিনের দফতরের সামনে, সিঁড়িতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
বিবিসি-র ওই তথ্যচিত্রকে ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই টানাপোড়েন চলছে
উল্লেখ্য, বিবিসি-র ওই তথ্যচিত্রকে ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই টানাপোড়েন চলছে। গুজরাত দাঙ্গা এবং গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে সেটি তৈরি হয়েছে। ভারতে সেটি ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। তার পরেও সম্প্রতি দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জামিয়া মিলিয়ায় সেটির প্রদর্শন ঘিরে ঝামেলা বাধে। এ বার তার আঁচ এসে পৌঁছল কলকাতাতেও।