ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: রাজ্যে (West Bengal) কয়লা, গরু পাচার নিয়ে রাজ্যজুড়ে তোলপাড়ের মাঝেই এবার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সোনা ও বিদেশি মুদ্রা পাচার। এতদিন দেশের মধ্যে সোনা পাচারের অন্যতম করিডর হিসেবে পরিচিত ছিল মুম্বই। বাণিজ্যনগরীর সেইসব ঘটনা নিয়ে সিনেমা সুপারহিট হয়েছে। সাম্প্রতিককালে কলকাতায় সোনা এবং বিদেশি মুদ্রা পাচারের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির। গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দিতে পাচারকারীরা এমন সব অভিনব কৌশল বার করেছে, যা দেখে তাজ্জব বনে যাচ্ছেন দুঁদে অফিসাররাও।
কখনও পটলের মাধ্যমে কখনও আবার বোতলে: বিভিন্ন কায়দায় এই পাচার কার্যত চিন্তা বাড়াচ্ছে। তদন্তকারীরা বলছেন, যে সমস্ত পাচারের ঘটনা সামনে আসছে, তা হিমশৈলের চূড়ামাত্র। কেন্দ্রীয় এজেন্সি যত বজ্র আঁটুনির ব্যবস্থা করছে, ততই ফাঁক গলে যাওয়ার নতুন নতুন কৌশল উদ্ভাবন করছে পাচারকারীরা। এ পরিস্থিতিতে পাচার আটকানোকে একরকম চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি। (kolkata Smuggling)
অদ্ভুত কৌশল: এতদিন সিনেমার গল্পে দেখা যেত সোনা পাচারের অদ্ভুত কৌশল। এবার রিয়েল লাইফে তা চাক্ষুষ করছেন কেন্দ্রীয় এজেন্সির অফিসাররা। এবার কি সোনা পাচারের সেফ করিডর হয়ে উঠছে বাংলা? সাম্প্রতিককালে কলকাতায় সোনা এবং বিদেশি মুদ্রা পাচারের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় তেমনটাই মনে করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি। কখনও পটলের পেট চিরে বেরোচ্ছে বিদেশি মুদ্রা। কখনও ক্রেডিট কার্ডের ভিতরে থাকছে সোনা।
কোমরের বেল্টে সোনা। চাবির গোছার মধ্যে সোনার চাবি। টিউবের মধ্যে গোল্ড পেস্ট। তদন্তকারীরা বলছেন, এভাবেই অভিনব কায়দায় চলছে সোনা পাচার। উদ্বেগ বাড়িয়েছে পাচারকারীদের কলকাতাকে সেফ করিডর বানানোর চেষ্টা।
কয়েকদিন আগে গোপনসূত্রে খবর পেয়ে ব্যাঙ্ককগামী এক যাত্রীকে আটক করা হয়। তাঁর ব্যাগের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয় বেশ কিছু পটল। দেখা যায়, কয়েক লক্ষ ডলার ভরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সেই পটলের মধ্যে। শুধু তাই নয় কিছুদিন আগে গোপন সূত্রে সোনা পাচারের খবর পেয়ে ব্যাঙ্কক থেকে আসা এক যাত্রীকে আটক করে শুক্ল দফতরের আধিকারিকরা। কিন্তু সোনা খুঁজে পেতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয়েছিল গোয়েন্দাদের। তারপর দীর্ঘ তল্লাশির পর দেখা যায় ওই যাত্রীর বেল্টের বাকলটি সোনার। পাশাপাশি তার কাছে থেকে পাওয়া গিয়েছে চাবির গোছাও। সেখানেও বেশ কিছু সোনার চাবি মিলেছে। এখানেই শেষ নয়, সোনার ক্রেডিট কার্ডও মিলেছিল আটক যাত্রীর কাছ থেকে। সবমিলিয়ে পাচারের এই হরেক অভিনব পদ্ধতি কার্যত ভয় ধরাচ্ছে। মনে করা হচ্ছে মুম্বইয়ের পাশাপাশি কলকাতাতেও সক্রিয় বড়সড় পাচার চক্র।