ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: একটি টিউমার (Tumor) অপারেশন (Operation) করতে গিয়ে বাদ যায় বালকের নিচের চোয়ালের মাড়ি ও দাঁতের অংশ। সেই অংশে পায়ের হাড় বসিয়ে হল প্লাস্টিক সার্জারি! SSKM-এ জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য।
রীতিমতো অসাধ্যসাধন! জটিল এক অস্ত্রোপচারে হাসি ফুটল এই বালকের মুখে। ৮ বছরের এই ছেলেটির চোয়ালের নীচে টিউমার হয়। চোয়ালের বাঁদিক থেকে ডানদিক জুড়ে বড় আকার ধারণ করে টিউমারটি। এরপর তা বাড়তে বাড়তে একটা সময় এমন আকার নেয়, যে, মাড়িতে প্রভাব ফেলতে থাকে।
জানা গিয়েছে, বাড়ি বিহারে হলেও, ছেলেটির পরিবার থাকে উত্তরপাড়ায়। বালককে নিয়ে শহর থেকে জেলার একাধিক হাসপাতালে ছোটাছুটি করে পরিবার। শেষমেষ যায় SSKM-এ। চিকিত্সকরা জানান, টিউমারটি অপারেশন করতে হবে। চোয়ালের বাঁদিক থেকে ডানদিক পুরোটা কাটতে হবে। সেক্ষেত্রে নিচের দাঁত ও মাড়ির অংশ বাদ পড়বে।
আরও পড়ুন, পেটের মধ্যে ২৫০টি পেরেক, ৩৫টি কয়েন! রোগীর কাণ্ডে মাথায় হাত চিকিৎসকদের
কিন্তু চোয়ালের নীচের অংশ বাদ পড়লে, ভয়ঙ্কর বিপদ হতে পারে। শিশুটি সারাজীবনের জন্য কথা বলার ক্ষমতা হারাতে পারে। হয়তো খেতেও পারবে না। এমনকী জিভ ঢুকে গিয়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে এক বিশেষ অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয় SSKM- এর প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ।
পোশাকি ভাষায় অপারেশনটির নাম- ম্যান্ডিবুলার রিকনস্ট্রাকশন। এক্ষেত্রে, একসঙ্গে দুটো অপারেশন হয়। মাড়ির বাঁদিক থেকে ডানদিকের টিউমারটি প্রথমে অপারেশন করে বের করা হয়। এরপর বালকের বাঁ পায়ের হাড়ের অংশ কেটে নিয়ে, সেটা টুকরো টুকরো করে বসানো হয় মাড়িতে। যাতে শিশুর চোয়ালের অংশ খোলা না থাকে। দীর্ঘ ৯ ঘণ্টার এই অপারেশনের পর বর্তমানে সুস্থ রয়েছে শিশুটি।
চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, বুধবার থেকেই কথা বলছে সে। নরম খাবার খেতে পারছে। ওই বালকের মা বলেন যে, চিকিত্সকদের কাছে কৃতজ্ঞ। চিকিত্সকরা বলছেন, এই রোগের নাম, অ্যামাইলোব্লাস্টোমা। মূলত বড়দের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এক্ষেত্রে শিশুবয়সেই এই রোগের শিকার শিশুটি।