জয়ন্ত পাল ও সৌমিত্র রায়, কলকাতা: টালা ট্যাঙ্কের পাইপ ভেঙে গিয়ে ব্যাহত হল কলকাতা পুরসভার একাধিক জায়গায় জল সরবরাহ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পাইপ মেরামতির কাজ শুরু করে পুরসভা। বিকেলের দিকে স্বাভাবিক হয় জল সরবরাহ। পুরসভা সূত্রে খবর, পাইপ পুরোনো হয়ে যাওয়ায় জলের বেগ সামলাতে না পেরে ভেঙে পড়ে।
ভাঙল টালা ট্যাঙ্কের পাইপ! পাইপের ভাঙা অংশ দিয়ে হু হু করে বেরোতে থাকে জল, যার জেরে ব্যাহত হয় কলকাতা পুরসভার একাধিক জায়গায় জল সরবরাহ। পুরসভা সূত্রে খবর, শনিবার সকাল ১০ নাগাদ হঠাৎ টালা ট্যাঙ্কের নীচে লোহার বাইপাস লাইনে জয়েন্টের একাংশ ভেঙে যায়। হুহু করে জল বেরোতে থাকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় মেরামতির কাজ।
কলকাতা পুরসভার ১ নম্বর ও ২ নম্বর বরোর একাধিক ওয়ার্ডে বন্ধ করে দেওয়া হয় জল সরবরাহ। পুরসভা সূত্রে খবর, পাইপ পুরোনো হয়ে যাওয়ায় জলের বেগ সামলাতে না পেরে ভেঙে পড়ে। মেরামতির সময় ওই পাইপ বদল করে দেওয়া হয়েছে। বিকেলের দিকে স্বাভাবিক হয় জল সরবরাহ।
উল্লেখ্য, গতবছরের শেষেই জানানো হয়েছিল টালার ট্যাঙ্ক (Tala Tank) থেকে শহরবাসীর (Kolkata) দুয়ারে আরও নির্ঝঞ্ঝাটে জল সরবরাহে তৈরি হচ্ছে নতুন পরিকাঠামো। চলছে ৪৮ ইঞ্চি ব্যাসের বড় পাইপলাইন বসানোর কাজ। সেই পাইপলাইন যাবে ট্রেসেল ব্রিজের মাধ্য়মে। শুরু হয়েছে সেই ব্রিজের কাজ। বয়স তার ১০০ পেরিয়েছে। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় তাকে রোজই দেখা যায়, কিন্তু ছোঁয়া যায় না। দেশ তাকে এক নামে চেনে ।
ঐতিহাসিক টালা ট্যাঙ্ক (Tala Tank) । যে মজবুত ইস্পাতে টাইটানিক জাহাজ গড়া হয়েছিল, তাতেই তৈরি এশিয়ার বৃহত্তম জলের ট্যাঙ্কের বিপুলায়তন শরীর । ব্রিটিশ আমল থেকেই টালার ট্যাঙ্ক মহানগরীর জলের ভাণ্ডার। কিন্তু সময়ের নিয়মে ট্যাঙ্ক হয়ে পড়েছিল জীর্ণ । ছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল জল । তাই চারটি কম্পার্টমেন্টই সারানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
৩টি কপার্টমেন্টের মেরামতির কাজ শেষ হলেও চলছে জলভাণ্ডারের চতুর্থ প্রকোষ্ঠের কাজ । সূত্রের খবর, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জানুয়ারিতেই খুলে দেওয়া হতে পারে সেটি।
কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipality Corporation) সূত্রে খবর, বর্তমানে পলতার জলশোধনগারে ২০ মিলিয়ন গ্য়ালন জল বেশি উৎপাদন হচ্ছে। সেই পরিশুদ্ধ জল এখন পাইপলাইনের মধ্য দিয়ে টালার ট্যাঙ্কে পৌঁছচ্ছে। ফলে আরও টইটম্বুর হয়ে উঠেছে শহরের জলধারণকারীর শরীর। টালা ট্য়াঙ্কের পাশেই তৈরি হচ্ছে ট্রেসেল ব্রিজ। যার মধ্যে দিয়ে যাবে পাইপলাইন। ভবিষ্যতে আরও একটি পাইপলাইন বসাতে গেলেও এই ট্রেসেল ব্রিজ ব্যবহার করা যাবে।
এর ফলে শহরে পানীয় জলের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে বলে মনে করছে কলকাতা পুরসভা । নয়া পাইপলাইনের কাজ পুরসভা করলেও ‘ট্রেসেল ব্রিজ’টি নির্মাণ করছে রাজ্য সরকারের পূর্তদফতর ।