শিবাশিস মৌলিক ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: বকেয়া ডিএ নিয়ে তুমুল আন্দোলন চলছে। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন রাজ্য সরকারি চাকুরে এবং অবসরপ্রাপ্তরা। তার মাঝেই এবার আরেক আন্দোলন।


ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মীদের আন্দোলনের মাঝেই এবার স্থায়ীকরণ, ৬০ বছরের কর্মজীবনের নিশ্চয়তা-সহ একাধিক দাবিতে আন্দোলনে নামলেন কৃষি দফতরের অস্থায়ী কর্মীরা। স্ট্র্যান্ড রোডে জেশপ বিল্ডিং অভিযান করল পশ্চিমবঙ্গ 'কৃষকবন্ধু' এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন। তাদের অভিযোগ, সরকারি আশ্বাসের পর ২ বছর কেটে গেলেও, ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। বকেয়া ডিএ-র দাবিতে ক্রমশ আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াচ্ছেন সরকারি কর্মীদের একাংশ। দাবি আদায়ে ১০ মার্চ ধর্মঘট ডেকেছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। যা নিয়ে সরকার ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে তীব্র টানাপড়েন শুরু হয়েছে। রাজ্যে যখন এমন পরিস্থিতি, তখন ভাতার বদলে বেতন, ৬০ বছরের কর্ম নিশ্চয়তা-সহ একাধিক দাবিতে জেসপ বিল্ডিং অভিযান করলেন কৃষি দফতরের অস্থায়ী কর্মী 'কৃষক বন্ধু'রা। পুলিশ বাধা দেওয়ার ছড়ায় উত্তেজনাও। 


কী অভিযোগ?
২০১৯ সাল থেকে 'কৃষকবন্ধু' প্রকল্পে কাজ করছেন আনুমানিক ৭৫০ অস্থায়ী কর্মী। পশ্চিমবঙ্গ 'কৃষকবন্ধু' এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে, সরকারের তরফে তাঁদের ৬০ বছরের কর্ম নিশ্চয়তার কথা বলা হয়েছিল। সংগঠনের সদস্যদের দাবি, কৃষি দফতর থেকে তাঁদের নামের ফাইল নবান্নে পাঠানো হয়। ২০২১-এর ৩ অগাস্ট তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতেও যান তাঁরা। সেই সময় তাঁদের সরকারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি। কিন্তু, অভিযোগ, আশ্বাস দেওয়ার পর ২ বছর কেটে গেলেও, প্রতিশ্রুতি রাখেনি রাজ্য সরকার। 


এই প্রেক্ষাপটে বুধবার স্ট্র্যান্ড রোডে জেশপ বিল্ডিং অভিযানের ডাক দেন কৃষক বন্ধু-সহায়ক কর্মীরা। পুলিশ বাধা দিলে বিল্ডিংয়ের নীচে গাড়ি বারান্দায় অবস্থানে বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। দ্রুত নিয়োগপত্র না পেলে, ভবিষ্যতে আরও বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কৃষকবন্ধু-সহায়ক কর্মীরা।


একদিকে বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবি। অন্যদিকে, ডিএ নিয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তি ঘিরে দ্বিচারিতার অভিযোগ।প্রতিবাদে সংগ্রামী যৌথমঞ্চের ডাকে মঙ্গলবার, দুপুর দুটো থেকে দু'ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন হয়েছিল বিভিন্ন সরকারি অফিসে। ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বাজেট পেশের দিন, সরকারি কর্মীদের ৩ শতাংশ ডিএ দেওয়ার ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু আন্দোলনকারীদের দাবি, সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে ৬ শতাংশ ডিএ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আদতে সরকার ঘোষণা করেছে ৩ শতাংশ ডিএ। আগের ৩ শতাংশ ডিএ, নতুন ঘোষণার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ১০ মার্চ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। সমর্থন করছে সিপিএমের রাজ্য সরকারি কর্মীদের সংগঠন রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি।


আরও পড়ুন: কলকাতায় ওয়াটার মিটার বসানো শুরু, অপচয় রুখে ভাবনায় জল কর ?