সন্দীপ সরকার, কলকাতা: পাভলভ ((Calcutta Pavlov Hospital) ) নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের (Health Department Report) চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট। রাজ্যের প্রথম সারির সরকারি মানসিক হাসপাতালে পরিষেবা নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ তো রয়েছেই। এবার তার সঙ্গে জুড়ে গেল আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগও! এবিষয়ে জানতে পাভলভের সুপারকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
শুধু নামেই উৎকর্ষ কেন্দ্র! আদতে একেবারেই বেহাল! স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে ফের কাঠগড়ায় পাভলভ হাসপাতাল। রাজ্যের প্রথম সারির এই মানসিক হাসপাতালে অতি নিম্নমানের রোগী পরিষেবা নিয়ে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তা নিয়ে শোকজ করা হয়েছে পাভলভের সুপারকে।
এবার স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ পাভলভ। গত এপ্রিল ও মে মাসে দু’ দফায় পাভলভ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। সপ্তাহখানেক আগে তাঁদের পর্যবেক্ষণে তৈরি যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তাতে বলা হয়েছে, পাভলভে রোগীদের খাবারের গুণগত মান অত্যন্ত খারাপ।
পরিমাণেও কম খেতে দেওয়া হয় মানসিক রোগীদের। দীর্ঘক্ষণ অভুক্ত থাকতে হয় তাঁদের। হাসপাতালে কোনও ডায়েট কমিটি নেই। অথচ হাসপাতালে আবাসিকদের খাবার বাবদ মাসিক খরচ ১৫ লক্ষ টাকার বেশি! বরাত সরবারহকারী সংস্থার সঙ্গে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের একাংশের আঁতাঁতে কোনও রকম নজরদারি ছাড়াই পাস হয়ে যায় বিল। একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে পাভলভের আবাসিকদের পোশাক নিয়েও।
স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে বলা হয়েছে, মানসিক রোগীদের পোশাকের জন্য বছরে এক কোটি টাকার বেশি খরচ হয় পাভলভের। অথচ রোগীদের ছেঁড়া-ফাটা, নিম্নমানের পোশাক পরিয়ে রাখা হয়। দেওয়া হয় না অন্তর্বাস। এবং এক্ষেত্রেও অভিযোগ, বন্ধ ঘরে নজরদারি ছাড়াই পাস হয়ে যায় বিপুল টাকার বিল।
স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আবাসিকদের শৌচাগার ব্যবহারের অযোগ্য। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভেঙে পড়ছে ঘরের দরজা-জানালা। হাসপাতালে নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। এবিষয়ে জানতে পাভলভের সুপারকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ঘটনাচক্রে, রবিবারই পাভলভের মেল ওয়ার্ডের বছর চল্লিশের এক আবাসিক একটি গাছে উঠে পড়েন। তাঁকে নামাতে পুলিশ ও দমকলকে ডাকা হয়। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালের কর্মীরাই ওই আবাসিককে বুঝিয়ে সুঝিয়ে গাছ থেকে নামান।