শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা : রবিনসন স্ট্রিটকাণ্ডের (Robinson Street) ছায়া এবার যাদবপুরের বিজয়গড়ে। মেয়ের মৃতদেহ আগলে বসে রয়েছেন মা। বিজয়গড়ের (Bijayghar) একটি ফ্ল্যাটে মেয়ে সঞ্চিতা বসুকে নিয়ে থাকতেন মা দিপালী বসু। প্রতিবেশীদের দাবি, গত কয়েকদিন ধরেই এলাকায় দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল।


সন্দেহ হওয়ায় ওই ফ্ল্যাটে আসা ফুড ডেলিভারি বয়কে সঙ্গে নিয়ে ভিতরে ঢোকেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের দাবি, ভিতরে গিয়ে দেখা যায় মে সঞ্চিতার মৃতদেহের পাশে বসে রয়েছেন মা দিপালী। তিনি বলেন, আগামীকাল মেয়ে ঘুম থেকে উঠবে! এরপর খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে যাদবপুর থানার পুলিশ (Jadavpur Police Station)। প্রতিবেশীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন সঞ্চিতা। তাঁর বাবা ও মাসির মৃত্যুর পর কিছুটা মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল দিপালী বসুর মধ্যেও। 


প্রসঙ্গত, গত কয়েকমাসে রাজ্যের একাধিক জায়গা থেকেই এই ধরণের ঘটনা সামনে এসেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বয়সজনিত একাকিত্বের ঘটনাক্রমও সামনে উঠে আসছে। চলতি মাসেই কয়েকদিন আগেই হাওড়ার (Howrah) ব্যাটরা থানার অন্ত:র্গত ডুমুরজলা এইচ আই টি কোয়ার্টারে এমন ঘটনা ঘটেছিল। যেখানে স্বামীর পচাগলা দেহ আগলে বসে থাকলেন স্ত্রী। পুলিশ (Police) এসে শেষমেশ দরজা ভেঙে উদ্ধার করে মৃতদেহ। পাশাপাশি বৃদ্ধার পরিবারকে দেওয়া হয় খোঁজ। যার কয়েক সপ্তাহ আগেই মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সাগরদিঘির (Sagardighi) পোপাড়া গ্রামে। মৃত মায়ের দেহ বেশ কয়েকদিন ধরে ঘরেই আগলে বসে ছিল ছেলে ! 


গত ফেব্রুয়ারি মাসে বেলেঘাটায় (Beleghata) ৯০ বছরের বৃদ্ধার মৃতদেহ আগলে বসেছিলেন মেয়ে। যেক্ষেত্রেও বেশ কয়েকদিন আগে মৃত্যুর জেরে দুর্গন্ধ বেরোনোর জেরে সন্দেহের বশে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্থানীয়রা। যেখানে সামনে উঠে এসেছিল একাকিত্ব ও মানসিক ভারসাম্যহীনতার প্রসঙ্গ। যে মাসেই হাওড়ার আরও একটা ঘটনা সামনে এসেছিল। সেবার ৪-৫ দিন ধরে মৃত স্ত্রীর সঙ্গে একই ঘরে কাটিয়েছিলেন স্বামী। হাওড়ার জগাছা থানা নন্দীপাড়ার এই বাড়িতে বছর ৭০-এর স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন ৭৫ বছরের তুষার চক্রবর্তী। একমাত্র মেয়ে থাকতেন হায়দরাবাদে। প্রতিবেশীদের দাবি, কিছু দিন বৃদ্ধ দম্পতির কাউকেই বাড়ির বাইরে দেখা যায়নি। যার পর তাঁদের বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু করে। সমীক্ষার কাজে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীদের। খবর পেয়ে ৬৭ বছরের তপতী চক্রবর্তীর পচাগলা দেহ উদ্ধার করে জগাছা থানার পুলিশ (Jagacha Police Station)।       


আরও পড়ুন- দুর্গম অন্নপূর্ণা জয় কীভাবে ? অভিজ্ঞতা শুনিয়ে পিয়ালি বসাক তৈরি হচ্ছেন মাকালু অভিযানে