সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি : আর জি কর মেডিক্যালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সুবিচার-সহ একগুচ্ছ দাবিতে টানা কর্মবিরতি পালন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এই প্রেক্ষাপটে, আর জি কর মেডিক্য়ালে বিনা চিকিৎসায় হুগলির কোন্নগরের বাসিন্দার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। যদিও, জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে দাবি করা হয়েছে, আহত ব্য়ক্তির চিকিৎসা হয়েছিল। এই নিয়ে নিয়ে তুঙ্গ উঠেছে তরজা। এরই মধ্যে ঢুকে পড়েছে রাজনীতি।


মঙ্গলবার মৃত তরুণের বাড়িতে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন-সহ অন্যরা। তার ঠিক পরই তৃণমূলের তরফে একাধিক ভিডিও পোস্ট করা হয় এই ইস্যুতে। চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত ২৮ বছর বয়সি বিক্রম ভট্টাচার্যের মা-বাবা দাবি করেন তাঁদের ছেলের চিকিৎসাই হয়নি আরজি কর মেডিক্যালে। ফোরাম ফর ডক্টরসের আহ্বায়ক পুণ্যব্রত গুঁই দাবি করেছিলেন, ওই যুবক চিকিৎসা পেয়েছিলেন। তৃণমূলের তরফে মোবাইলে কথোপকথনের একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে।  



তৃণমূল এক্স হ্য়ান্ডেলে ভিডিওটি সামনে আনে। সেখানে মৃত ব্যক্তির মা-কে বলতে শোনা যায়, পুরোপুরি মিথ্য়ে কথা বলা হচ্ছে। তাঁর ছেলের চিকিৎসা হয়নি। মৃত তরুণের মা জানান,'চিকিৎসা তো ওঁরা করেননি। ওঁরা তো রোগীকে ফেলে রেখেছেন। আমি তো এই বিল্ডিং ওই বিল্ডিং দৌড়াদৌড়ি করছি। ডাক্তার কোনও চিকিৎসা করেনি। আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানেই ডাক্তার নেই। আমি যেই বিল্ডিং-এ, সেই বিল্ডিং-এই বলছে ডাক্তার নেই। আমার ছেলের চিকিৎসাটা তো হয়নি।... ওঁরা যেটা বলছেন, পুরোপুরি মিথ্যে কথা বলছেন। ওঁরা কোনও চিকিৎসা করেননি। '  পরিবারের অভিযোগ, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে তাঁকে ৪-৫ ঘণ্টা ফেলে রাখা হয়। পরে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে ফোরাম ফর ডক্টর্সদের দাবি, ভিডিওটি পুরোটা সাজানো।


বিক্রম ভট্টাচার্য নামের ওই যুবক ট্রমা এমার্জেন্সি ইউনিটে ভর্তি ছিলেন। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু শেষ অবধি মৃত্য়ু হয় তাঁর। ইন্ডিয়ান মেডিক্য়াল অ্য়াসোসিয়েশনের বাংলা শাখার তরফে বিবৃতি দিয়ে লেখা হয়,'এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক যে কিছু মৃত্যুর জন্য জুনিয়র চিকিৎসকদের দায়ী করা হচ্ছে। যা সম্পূর্ণভাবে মিথ্য়ে। এবং কোনও হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকদের এই আন্দোলনের জন্য পরিষেবা পুরোপুরি ব্যাহত হয়নি। ' শুক্রবার, ভোর চারটে নাগাদ কোন্নগরের বাসিন্দা বিক্রম ভট্টাচার্যের পায়ের উপর দিয়ে চলে য়ায় একটি ডাম্পার। গুরুতর জখম অবস্থায় শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে কলকাতায় রেফার করা হয়।