অর্ণব মুখোপাধ্যায়, দীপক ঘোষ, আশাবুল হোসেন, কলকাতা : 'যো হামারি সাথ, হাম উনকা সাথ.... সংখ্যালঘু মোর্চার প্রয়োজন নেই' - শুভেন্দুঅধিকারীর এই মন্তব্য নিয়ে সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্য নিয়ে স্পষ্ট বিভাজন যেন বঙ্গ বিজেপিতেও। প্রশ্ন উঠছে, বাংলায় লাগাতার হারের পর, এবার জয়ের মুখ দেখতে কি কট্টর হিন্দুত্বের লাইন আঁকড়ে ধরতে চাইছেন শুভেনদু অধিকারী? 


শুভেন্দুর কট্টরপন্থী বার্তা 
বিরোধী দলনেতার দাবি, 'পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে দাঁড়িয়ে আপনি এটা অস্বীকার করতে পারবেন না যে, শুধুমাত্র সনাতনী হিন্দুরাই বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। সংখ্যালঘু বিশেষ করে মুসলিমরা বিজেপিকে ভোট দেয়নি। ১০০জন মুসলিমের মধ্যে ৯১জন ২০২১-এ ভোট দিয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জিকে। এবারে ৯৫ শতাংশ মুসলিম ভোট দিয়েছে, সেই কারণে আমি রাজনৈতিক আমার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলেছি।'  


সুকান্তর ভিন্ন সুর
তবে ভিন্ন সুরে কথা বলছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর যুক্তি , 'আমরা জানি আমাদের ভোট দেবে না। দেবে না দেবে না। কুকুর মানুষকে কামড়ায়, তা বলে মানুষ কি কুকুরকে কামড়াবে নাকি! আমরা সকলকে নিয়েই চলব। ' 


কুণালের মুখে শুভেন্দু স্তুতি 
এই পরিস্থিতিতে আবার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। ' বিরোধী নেতা হিসেবে , বিজেপি নেতা হিসেবে, তৃণমূলের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রশ্নে , এসব সুকান্তবাবুদের থেকে তো ঢের এগিয়ে শুভেন্দু অধিকারী। সুতরাং এরা সবাই মিলেও কী পাল্লা দিতে যাবে শুভেন্দুর সঙ্গে। শুভেন্দু অধিকারী ভুল রাজনীতি করছে, ভুল কথা বলছে। তৃণমূলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। কিন্তু বিজেপিতে যারা রয়েছে, তার মধ্যে শুভেন্দুকেই একমাত্র নজর রাখা যায়। চারটি খারাপ কথা বললে, চারটি খারাপ কথার জবাব দেওয়া যায়...শুভেন্দু অধিকারী আছে বলে বিজেপিটা ভেসে আছে...নেতা হিসেবে সুকান্ত শুভেন্দুর জুতো পালিশ করারও যোগ্য নয় '  


অন্য মত শঙ্করেরও 
এই বিতর্কের মধ্য়েই বঙ্গ বিজেপির কাউকেই প্রায় সরাসরি শুভেন্দুকে পাশে পাওয়া যাচ্ছে না। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, 'মাননীয় বিরোধী দলনেতা যে কথাটা বলেছেন, তিনি তার ব্যাখ্যা ইতিমধ্যে দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের পরিপ্রেক্ষিতে আমি মনে করি, অনুপ্রবেশ, প্রান্তিক মুসলিমদের দুরাবস্থা, মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের নীরবতা এবং তার পাশাপাশি এই রাজ্যে মাননীয় পুরমন্ত্রী আর ইসলাম ব্যাতিত অন্যান্য ধর্মের জন্মসূত্রে, যারা অন্য ধর্মে জন্মগ্রহণ করেছেন, তাঁদের দুর্ভাগা বলা এবং প্রচ্ছন্নভাবে ধর্মান্তকরণে উৎসাহিত করা। আমি মনে করি এগুলি অনেক বেশি এই মুহূর্তে প্রাসঙ্গিক।' 


শুভেন্দুর 'কট্টর হিন্দুত্বের' লাইন কি বঙ্গ বিজেপিকে সাফল্য় এনে দেবে? শেষমেশ কোন পথে এগোবে বঙ্গ বিজেপি?  আর এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দুকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে কী বার্তা দিতে চাইছেন শুভেন্দু ? উত্তর দেবে সময়।  


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।