বিশ্বজিৎ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: খড়গপুরে দিলীপ ঘোষের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ। দিলীপ ঘোষের বাড়ির সামনে কুড়মিদের বিক্ষোভ। সম্প্রতি কুড়মি আন্দোলন নিয়ে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বাগবিতন্ডা হয়েছিল দিলীপ ঘোষের।


দিলীপ ঘোষের বাড়ির গেট ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। কুড়মি সম্প্রদায়কে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষের কুরুচিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। দিলীপ ঘোষকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি। ক্ষমা না চাইলে আরও বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি।


জঙ্গলমহলে দিলীপ ঘোষকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর, এবার তাঁর বাংলোয় চড়াও হলেন কুড়মি সম্প্রদায়ের আন্দোলনকারীরা। খড়গপুর টাউনে থাকাকালীন দিলীপ ঘোষ রেলের যে বাংলোয় থাকেন, তাতে ঢুকে পড়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা। বাংলোর গেট ভেঙে হুড়মুড়িয়ে তিতরে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টাও করে তারা। এরপর, সেখানেই বসে পড়ে চলে বিক্ষোভ। দিলীপ ঘোষ মুর্দাবাদ লেখা ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ। ছিড়ে ফেলা হয় বাংলোর সামনে থাকা ব্যানার। 


আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত মাহাতো বলেন, 'এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করছি। নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে দিলীপ ঘোষকে। ক্ষমা না চাইলে জঙ্গলমহলের প্রতিটা থানায় মানহানির অভিযোগ করব। দেখব কোথায় যায়।'


বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'আমার লোকজনও আছে। আমরা চাইলে প্রতিরোধ করতে পারতাম। আমরা তো ঝগড়া করতে যাইনি। কিছু মদমাতালকে মেরে কী হবে? আগে ও ক্ষমা চাক। কেন আমার বাড়িতে এসেছে মাতালদের নিয়ে।'


রবিবার, ঝাড়গ্রামের লালগড়ে যাওয়ার পথে বামাল গ্রামে দিলীপ ঘোষকে ঘেরাও করেন কুড়মিরা। সেই সময় দুপক্ষের মধ্যে কথোপকথন হয়। কুড়মি সমাজের এক প্রতিনিধি জিজ্ঞাসা করেন, 'দু'বছর আগে জঙ্গলমহলে কুড়মিদের একটা বড় কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল, তখন সেটা রেল অবরোধ, আপনার কাছ থেকে কোনও সৌজন্যবোধ আমরা পাইনি বা কোনও প্রতিক্রিয়া পাইনি।' তখন দিলীপ ঘোষ বলেন, 'কেউ যোগাযোগ করেছিলেন আমার সঙ্গে?' তখন কুড়মি সমাজের প্রতিনিধি বলেন, 'হ্যাঁ ২০১৯ সালে আপনার বাড়ি গিয়েছিলাম।' তখন দিলীপ ঘোষ বলেন, 'ওখানে যারা ছিলেন তাদেরকে চাল ডাল পাঠিয়ে আমি খাইয়েছি, খেমাশুলিতে।' এই দাবি করতেই দিলীপ ঘোষকে জঙ্গলমহলে নিষিদ্ধ করার হুঁশিয়ারি দেয় কুড়মি সমাজ। এনিয়ে, আবার বেনজির ভাষায় কুড়মিদের আক্রমণ করে বসেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'বেশি বাড়াবাড়ি করলে কাপড় খুলে দেব। দিলীপ ঘোষের পিছনে লাগতে এস না... হিম্মত থাকলে মাহাতো এমপিদের রিজাইন করাক। আমার এলাকায় যারা বসেছিলেন আমি তাদের সাহায্য করেছি।'


দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। দিলীপ ঘোষ দিল্লিতে থাকলেও,তাঁর খড়গপুরের বাংলোয় এদিন চড়াও হন বিক্ষোভকারীরা। পাল্টা দিলীপ বলেন, 'ওর নেতাগিরি আমি ঘুচিয়ে দেব। ওর মতন এই যে চোর দালাল যতগুলো নেতা না, সব কটার মুখোশ খুলে দেব। কে কার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে আমি জানি। আমি বলিনি এখনও। কারণ ওদের মধ্যেই ঝগড়া বেঁধে যাবে। কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না, কেউ কাউকে মানে না। কুড়মিদের মত সহজ সাধারণ মানুষকে বোকা বানাচ্ছে।' 


এদিন, বাঁকুড়ার সিমলাপালের হরিণপুরে শুভেন্দু অধিকারীর কনভয় থামিয়ে তাঁদের অভাব অভিযোগ জানান কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন। অন্যদিকে, এদিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয় কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিদের। কুড়মিদের তফশিলি জাতিভুক্ত করার বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করার আশ্বাস দিয়েছে রাজ্য সরকার। 


আরও পড়ুন: মোবাইল হারিয়েছে? এক ক্লিকেই ব্লক ফোন! খুঁজেও পাবে পুলিশ!