আবীর দত্ত, কলকাতা: শান্তনু ঘনিষ্ঠ অয়ন শীলের নতুন আরও ১০টি অ্যাকাউন্টের হদিশ পেল ইডি। এই নিয়ে অয়নের ৪২টি অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। ইডি সূত্রে খবর, এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কাদের সঙ্গে লেনদেন হয়েছে, তার তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। অন্য়দিকে, নিয়োগ-দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখনও পর্যন্ত ৩০টির বেশি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে ইডি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, শান্তনুর নামের অ্যাকাউন্টগুলিতে ৫০ লক্ষ টাকা ছিল। নজর ঘোরাতেই কি ঘনিষ্ঠদের অ্যাকাউন্টে টাকা? প্রশ্ন ইডি-র। সূত্রের খবর, অয়ন শীলের ৪২টি অ্যাকাউন্টের মধ্যে শান্তনুর সঙ্গে কী কী লেনদেন হয়েছে তা খতিয়ে দেখছে ইডি।


নিয়োগ-দুর্নীতিকাণ্ডে ইডি-র স্ক্যানারে অয়ন শীল, তাঁর ঘনিষ্ঠ শ্বেতা চক্রবর্তী ও অয়নের আত্মীয়দের ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। ইডি সূত্রে খবর, তল্লাশির দিনেই অয়ন, অয়নের স্ত্রী কাকলি, বান্ধবী শ্বেতা, অয়নের বাবা সদানন্দ শীল, মা অমিতা ও অয়নের ছেলে অভিষেক-সহ আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের ৩২টি অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। এর মধ্যে রয়েছে অয়নের সংস্থা ABS ইনফোজোন প্রাইভেট লিমিটেডের নামে ২টি অ্যাকাউন্ট ও হুগলিতে অয়নের পেট্রোল পাম্পের নামে ৩টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। ইডি-র সিজার লিস্টে এই অ্যাকাউন্টগুলির উল্লেখ রয়েছে। এই অ্য়াকাউন্ট থেকে কোথায় কোথায় লেনদেন হয়েছে, সেটাই খতিয়ে দেখছেন ইডি-র তদন্তকারীরা। 


তাঁর পাপের ভাগীদার হতে রাজি নয় পরিবার। এই কথা জানার পরই বদলে গেছিল দস্য়ু রত্নাকরের জীবন। এক্ষেত্রে গোটা পরিবারকে পাপের জালে জড়িয়ে ফেলার অভিযোগ উঠল, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত, প্রোমোটার অয়ন শীলের বিরুদ্ধে। ED সূত্রে দাবি, অয়ন শীল, অয়নের স্ত্রী কাকলি, ছেলে অভিষেক, অয়নের বাবা সদানন্দ শীল, মা অমিতা, অয়নের ঘনিষ্ঠ শ্বেতা চক্রবর্তী, অয়নের ছেলের ঘনিষ্ঠ ইমন গঙ্গোপাধ্য়ায়, অয়নের অফিসের কর্মী, আত্মীয় স্বজনদের নামে সবমিলিয়ে মোট ৪২টি অ্য়াকাউন্টের হদিশ মিলেছে।  ED সূত্রে দাবি, অয়নের সল্টলেকের বাড়িতে হানা দিয়ে সম্পত্তি সংক্রান্ত প্রচুর নথি উদ্ধার হয়েছে। 


উদ্ধার হয়েছে স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির বিশাল তালিকা। ইডি সূত্রে দাবি, সেই সম্পত্তির বেশিরভাগটাই অয়ন কিনেছিলেন আত্মীয় স্বজন, ঘনিষ্ঠ কিম্বা অফিসের কর্মচারীদের নামে। যেমন, ২রা অক্টোবর ২০২০ - এই তারিখে হুগলির গুড়াপের ঘোশলা মৌজায় ছেলে অভিষেক ও ছেলের ঘনিষ্ঠ ইমন গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নামে ১ কোটি টাকার সম্পত্তি কিনেছিলেন অয়ন শীল। বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির স্ট্য়াম্প ডিউটি ১০ লক্ষ ৩৭ হাজার ৬০০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৯৭৬ হাজার টাকা। লকডাউনে কেনা এই সম্পত্তি ছাড়াও, ২০১৯-এর পয়লা ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের 



বেঁওতা মৌজায় কেনা হয় আরেকটি সম্পত্তি। এটির মালিক রীতেশ জয়সওয়াল। সূত্রের খবর, এই রীতেশ অয়নের সংস্থা ABS ইনফোজোনের কর্মী। জমিটির বাজারদর ৫ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা ED সূত্রে দাবি, ২০১৬ সালের ১২ই অগাস্ট, এই দিনটিতে তিনটি সম্পত্তি কেনেন অয়ন। প্রত্য়েকটিই বেনামে। তিনটি জমিই কেনা হয় ভাঙড়ের বেঁওতা মৌজায়। ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় কেনা হয় একটি জমি। এর মালিক তপন পুরকাইত। এছাডা় আরও দুটি জমি কেনা হয়। ২টোর দামই ২ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা করে।


একটি জমির মালিক লীলা গুপ্ত। আরেকটির মালিকের নাম হীরালাল বিশ্বাস। সূত্রের খবর, শেষের দুটি জমিই বাজার দরের থেকে কম টাকায় কেনা হয়। জমি দুটির প্রকৃত বাজার দর, ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৩০০ টাকা করে। ED সূত্রে দাবি, এই তপন পুরকাইত, লীলা গুপ্ত কিম্বা হীরালাল বিশ্বাস... এঁরা প্রত্য়েকেই হয় অয়নের ঘনিষ্ঠ, নয়তো অফিসের কর্মচারী। ৫টি জমি নজরে ইডির। নামে বেনামে কেনা। এক ডেটে ৩ টি জমি। আগেই দেখা গেছে, কালো টাকাকে সাদা করার জন্য় অনুব্রতর পথ অনুসরণ করেছিলেন অয়ন। নামে-বেনামে আত্মীয় স্বজনদের নামে বিভিন্ন সময়ে প্রচুর সম্পত্তি কিনেছিলেন শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ঘনিষ্ঠ এই প্রোমোটার। 


এছাড়াও, ED সূত্রে দাবি, ৪২টি অ্য়াকাউন্টের মধ্য়ে রয়েছে, ABS ইনফোজোন প্রাইভেট লিমিটেডের নামে ২টি অ্যাকাউন্ট ও হুগলিতে অয়নের পেট্রোল পাম্পের নামে ৩টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। এই অ্য়াকাউন্ট থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন হয়েছে, কাদের অ্য়াকাউন্টে গেছে টাকা, সেটাই খতিয়ে দেখছেন ইডি-র তদন্তকারীরা।