ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: লালন শেখকে গুলি করে মারার ছক কষেছিল সিবিআই (CBI)। সিআইডি-র  (CID) ডিআইজি-র সামনে বিস্ফোরক দাবি করলেন নিহত লালন শেখের (Lalan Sheikh Death Investigation) স্ত্রী রেশমা (Reshma) । কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরে আজ বগটুইয়ে যান সিআইডি-র ডিআইজি। সেখান থেকে তিনি যান রামপুরহাটে সিবিআই-এর অস্থায়ী ক্যাম্পেও।  


ভুয়ো এনকাউন্টারে লালনকে হত্যার ছক ছিল! দাবি স্ত্রী রেশমার


কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর, সোমবার লালন শেখের মৃত্যু রহস্যের তদন্তে বগটুইয়ে গ্রামে যান সিআইডি-র ডিআইজি সোমা দাস মিত্র। তাঁর সামনে  সিবিআই-এর বিরুদ্ধে এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন মৃত লালনের স্ত্রী রেশমা। তাঁর দাবি, ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর স্বামীর হাতে হাতকড়া পরানো হয়নি, যাতে পালাতে গেলে গুলি করা যায়। 


গত ১২ ডিসেম্বর, মৃত্যুর আগে, লালন শেখকে নিয়ে বগটুইয়ে তাঁর শ্বশুরবাড়ি-তে নিয়ে যায় সিবিআই। সেই দিন ঠিক কী ঘটেছিল, সিবিআই অফিসারদের ভূমিকা কী ছিল, সেই সমস্ত বিষয়ে লালনের স্ত্রীর কাছে জানতে চান সিআইডি-র ডিআইজি। সূত্রের খবর তাতে লালনের স্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, "(জায়গা দেখিয়ে) আমার স্বামীকে এখানে দাঁড় করিয়ে রেখে মারধর করেছে। আমি দেখে ছুটে এলাম এখানে। বিলাসবাবু এখানে দাঁড়িয়ে আছেন। ওঁর পায়ে আমি পড়ে গেলাম। ওকে মারবেন না। স্যর আমরা কিচ্ছু জানিনা। বাড়িতে চুরি হয়ে গিয়েছে । কিচ্ছু জানি না এই সব বিষয়ে।"


আরও পড়ুন: Hooghly: বয়স্ক ব্যক্তিরে মার পুরচেয়ারম্যানের! আচরণের নিন্দা করে ক্ষমা চাইলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক


তাঁর চোখের সামনেই লালনকে মারধর করা হয় কিনা, জানতে চান সিআইডি-র ডিআইজি। তাতে রেশমা জানান, তাঁর চোখের সামনেই মারধর করা হয় স্বামীকে। সেই কি শেষ বার স্বামীকে দেখেন তিনি! উত্তরে রেশমা জানান, জীবিত সেই শেষ বার। তার পর মর্গে গিয়ে লাশ দেখেন। 


রাজ্য গোয়েন্দাদের সঙ্গে এই কথোপকথন চলাকালীনও আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করেন রেশমা। বলেন, "চন্দ্রকুণ্ঠ মাঠে নিয়ে গিয়েছে। ওখানে ছেড়ে দিয়েছে। বলছে, যা দৌড়ে পালা। পালাবে তবে তো আমার স্বামীকে মারবে...পালাননি উনি। নিয়ে গিয়ে মেরে দিল। গুলি করার পজিশনে রেখেছিল। যদি ছুটে পালাত, গুলি করে দিত।"

বগটুই গ্রামে লালন শেখের স্ত্রীর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলার পরে, সিবিআই-এর অস্থায়ী ক্যাম্পে যান রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থার ডিআইজি সোমা দাস মিত্র। রামপুরহাটের সরকারি গেস্ট হাউস পান্থশ্রীর অস্থায়ী ক্যাম্প থেকেই বগটুই হত্যাকাণ্ড এবং ভাদু শেখ খুন- দু'টি ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছিল সিবিআই। বগটুই থেকে সোজা সেই ক্যাম্পে যান সিআইডি-র ডিআইজি।


সোমবার লালন শেখের মৃত্যু রহস্যের তদন্তে বগটুইয়ে গ্রামে যান সিআইডি-র ডিআইজি

এই ক্যাম্পের যে শৌচাগারে বগটুই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়, সেটিও ঘুরে দেখেন সিআইডি-র ডিআইজি।
বিকেল ৩.৪৫ নাগাদ রামপুরহাটের একটি গেস্ট হাউসে সিআইডি-র ডিআইজি-র সঙ্গে দেখা করেন লালনের স্ত্রী রেশমা। এর পর একে একে লালনের মৃত্যুর তদন্তকারী অফিসার এবং রামপুরহাট থানার আইসি-সহ মোট ৭ জন পুলিশ কর্মী, যাঁরা লালনের দেহ উদ্ধারের সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেন সিআইডি-র ডিআইজি। ফরেন্সিক টিমের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়।