পার্থপ্রতিম ঘোষ, বীরভূম: হেফাজতে লালনের রহস্যমৃত্যু, সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে এবার তদন্তে সিআইডি। রামপুরহাটে সিবিআই ক্যাম্পে রহস্যমৃত্যু, তদন্তভার গ্রহণ করল সিআইডি। স্বামীর মৃত্যুর তদন্তে সিআইডি তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন লালনের স্ত্রী। সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে খুন, তোলাবাজি-সহ একাধিক ধারায় মামলা। রামপুরহাট থানা থেকে কাল কেস ডায়েরি নেবে সিআইডি। ইতিমধ্য়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন সিআইডি-র আধিকারিকরা। 


সিল খোলা নিয়েও ঝামেলা:
আদালতের নির্দেশে লালন শেখের বাড়ির সিল খোলা হলেও, চাবিই পেল না সিবিআই। তালা ভেঙেই বাড়িতে ঢুকতে হল লালন শেখের পরিবারকে। সিবিআইয়ের সামনেই তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকতে হল পরিবারের সদস্যদের।বাড়িতে লন্ডভন্ড অবস্থা দেখে সিবিআইয়ের ওপর ক্ষোভ উগরে দিলেন বাড়ির লোকজন। তল্লাশির নামে বাড়িতে লুঠপাট চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। 


কী অভিযোগ করেছিলেন লালনের স্ত্রী?
সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় সরগরম রাজ্য। সিবিআইয়ের (CBI) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন লালন শেখের স্ত্রী ( Lalan Sheikh's Wife)। সিবিআই হেফাজতে বগটুইকাণ্ডের (Bogtui Case) মূল অভিযুক্তের মৃত্যু ঘিরে তুলকালাম বীরভূমে। 'মামলা ধামাচাপা দিতে ৫০ লক্ষ টাকা চেয়েছিল সিবিআই', বিস্ফোরক দাবি লালনের স্ত্রীর। খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে লালনকে, অভিযোগ লালনের স্ত্রীর।


সরব মুখ্যমন্ত্রী:
মেঘালয়ের শিলংয়ে মমতা বলেন, 'হেফাজতে লালনের মৃত্যু নিয়ে উত্তর দিতে হবে সিবিআইকে। সিবিআই এত স্মার্ট হলে কীভাবে ঘটল এধরনের ঘটনা? লালন শেখের স্ত্রী এফআইআর দায়ের করেছেন। আমরাও এই বিষয়টি নিয়ে সরব হব।'


মদনের তোপ:
বগটুই কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন রহস্যমৃত্যুতে এবার শুভেন্দু অধিকারীর গ্রেফতারি দাবি করলেন মদন মিত্র। শুভেন্দুর ডিসেম্বর-তত্ত্বকে হাতিয়ার করে গ্রেফতারি দাবি মদনের। তিনি বলেন, 'শুভেন্দুই বলেছিলেন ১২ ডিসেম্বর অপারেশন হবে। সবার আগে শুভেন্দুকে দড়ি বেঁধে গ্রেফতার করা উচিত। এটা আত্মহত্যা না খুন, কে বলবে?'


আগে যা হয়েছে:
গত ২১ মার্চ রাতে রামপুরহাটে জাতীয় সড়কের ধারে, তৃণমূলের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পরই বগটুই গ্রামে সংগঠিত হয় প্রাণঘাতী হামলা! জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একের পর এক বাড়ি! অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় মোট ১০ জনের। সিবিআই সূত্রে দাবি, হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিল নিহত তৃণমূল নেতা ভাদু-ঘনিষ্ঠ লালন শেখ। ঘটনার পর ভিন রাজ্যে গা ঢাকা দেয় লালন। ৩ ডিসেম্বর বীরভূম লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের পাকুড় থেকে লালন শেখকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ৪ তারিখ আদালতে তোলা হলে ৬ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয় রামপুরহাট মহকুমা আদালত। ১০ তারিখ ফের তাকে রামপুরহাট মহকুমা আদালতে হলে বিচারক লালনকে ফের তিন দিন সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন।


আরও পড়ুন: 'সিবিআই এত স্মার্ট হলে কীভাবে ঘটল এধরনের ঘটনা?', লালন-মৃত্যুতে সরব মমতা