সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে পোস্টার দেওয়ার পিছনে হাত রয়েছে এক আইনজীবীর। পোস্টার ছাপা হয়েছে হেয়ার স্ট্রিট থানা এলাকার একটি ছাপাখানায়। হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়ে জানাল পুলিশ। কোন আইনজীবী জড়িত? আদালত জানতে চাওয়ায়, রাজ্য সরকারের আইনজীবী বললেন পুলিশ রিপোর্ট দিয়ে তা জানাবে।


তিন মাস কেটে গেলেও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে পোস্টার দেওয়ার ঘটনায়, এখনও পর্যন্ত একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এই প্রেক্ষাপটেই ওই ঘটনা নিয়ে, মঙ্গলবার হাইকোর্টে নতুন রিপোর্ট পেশ করলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার। ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে পোস্টার লাগানো হয়েছিল। আদালতে দাবি করলেন, ৬ সন্দেহভাজনের আইনজীবী। এদিন পুলিশের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রোডের পার্ক প্রিন্টিং নামে একটি ছাপাখানায় পোস্টারগুলি ছাপা হয়েছিল। ছাপাখানাটি হেয়ার স্ট্রিট থানার অন্তর্গত। এদিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, প্রথমে অস্বীকার করলেও, পরে ছাপাখানার মালিকরা ওই পোস্টার ছাপানোর কথা স্বীকার করেছেন। ছাপাখানার দুই মালিককে আদালত অবমাননার নোটিস দেওয়া হয়েছে।





পুলিশের রিপোর্টে, ৮ জানুয়ারির ওই ঘটনায় এক আইনজীবীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে পোস্টার ছাপানোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিচারপতির বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ সামনে আনার জন্যই, ওই আইনজীবী ও তাঁর সহযোগীরা কাজটি করেছেন। এই প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জানতে চান, কে ওই আইনজীবী? সেটা জানলেই তো ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়বে। তখন রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, পুলিশ কমিশনার ফের রিপোর্ট পেশ করবেন। সেখানে অভিযুক্ত আইনজীবী এবং তাঁর সহযোগীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হবে।

পোস্টার সাটানোর অভিযোগে, যে ৬ জন সন্দেহভাজনকে পুলিশ জেরা করেছে, এদিন তাঁদের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, ওই ৬ জন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন, তাঁরা পোস্টার সাঁটানোর কাজ করেছিলেন, কিন্তু তাঁরা কেউই শিক্ষিত নন।পোস্টারের লেখা সম্পর্কে কিছু জানতেন না। ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে কাজ করেছিলেন। তিন মাস কেটে গেলেও, এরকম এক মারাত্মক ঘটনায় কেন এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি? এই প্রশ্ন যখন ঘুরেফিরে উঠছে, তখন আদালতে ফের উঠে এল প্রভাবশালীর প্রসঙ্গ। এদিন বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস বলেন, গোটা ঘটনার পিছনে কে বা কারা আছেন সেটা আমরা খুঁজে বের করব। কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তি বা কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি, এর পিছনে আছেন কি না সেটা আমরা খতিয়ে দেখব। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে মে মাসে।