অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: ফের ডুয়ার্সে চিতাবাঘের মৃত্যু। এবার আলিপুরদুয়ার জেলার বীরপাড়ায় উদ্ধার হল পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের দেহ। ঘটনাস্থল আলিপুরদুয়ার জেলার বীরপাড়া থানার অন্তর্গত তুলসিপাড়া চা বাগান এলাকা। প্রাণীটির দেহের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে বন দফতর সূত্রের খবর। মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুর নাগাদ স্থানীয়রাই প্রথম লক্ষ্য করেন চিতাবাঘের দেহ পড় থাকতে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরপাড়া থেকে লঙ্কাপাড়া যাওয়ার রাজ্য সড়কের কাছে পড়ে ছিল ওই চিতাবাঘের দেহ। প্রাণীটির পেটের কাছে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রের খবর। তারপরেই খবর দেওয়া হয় বন দফতরকে। জলপাইগুড়ি ডিভিশন অন্তর্গত দলগাঁও রেঞ্জের বনকর্মীরা এসে উদ্ধার করে চিতাবাঘের দেহ। বনকর্মীরা মনে করছেন, পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ চিতাবাঘটির বয়স ৭ থেকে ৮ বছর।
কীভাবে মৃত্যু:
বনকর্মীদের প্রাথমিক ধারণা, চা বাগানের মাঝ দিয়ে গিয়েছে রাস্তা। সেই রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির কোনও গাড়ির ধাক্কায় মারা গিয়ে থাকতে চিতাবাঘটি। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।
বন দফতরের দলগাঁও রেঞ্জ আধিকারিক অশেষ পাল জানান, দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। আগামীকাল ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও পরিষ্কার হবে মৃত্যুর আসল কারণ।
এটাই প্রথম নয়। এর আগেও তরাই-ডুয়ার্স এলাকায় একাধিকবার চিতাবাঘের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। কদিন আগেই বাগডোগরায় জলের রিজার্ভারে ডুবে মারা যায় একটি চিতাবাঘ। বাগডোগরার হাঁসখোয়া চা বাগানের ঘটনা ছিল সেটি। কোনওভাবে জলের রিজার্ভারে পড়ে যায় চিতাবাঘটি। বেশ কিছুক্ষণ সাঁতরে ভেসে থাকার চেষ্টা করে সে। খবর পেয়ে হই হই পড়ে যায়। রিজার্ভারের চারিদিকে ভিড় করেন অনেকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চিতাবাঘটিকে তোলা যায়নি। জলে ডুবেই মারা যায় প্রাণীটি।
বসতি এলাকায় চিতাবাঘ:
তরাই-ডুয়ার্স এলাকায় বারবার মানুষ-বন্যপ্রাণ সংঘাতের ঘটনা উঠে এসেছে। কখনও হাতি, কখনও বাইসন, কখনও আবার চিতাবাঘ। কিছুদিন আগেই আলিপুরদুয়ারের শিলবাড়িহাট ঘাটপার গ্রামজুড়ে ঘণ্টাপাঁচেক ধরে চলে চিতাবাঘ (Leopard) আতঙ্ক। আম গাছের ডালে একটি চিতাবাঘকে বসে থাকতে দেখেই আতঙ্ক ছড়ায়। হুড়োহুড়ি শুরু হতেই সতর্ক হয়ে যায় চিতাবাঘটি। বনদফতরের কর্মীরা আসেন। ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হলেও সঙ্গে সঙ্গে বাগে আসেনি প্রাণীটি। অন্য গাছে লাফ দেয়। আশপাশের এলাকায় জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। পরে ফের ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। তারপরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে প্রাণীটি। পরে চিকিৎসা করে চিতাবাঘটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বিখ্যাত ঋণ প্রদানকারী সংস্থার নাম ব্যবহার করে প্রতারণার অভিযোগ, গ্রেফতার ১