কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় পোস্টার-রহস্য! শহরে দেখা গেল ‘বাংলায় বিকল্প রাজনীতি’র পোস্টার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই পড়ল কলকাতা জুড়ে চোখে পড়ল এই পোস্টার। তেরঙ্গা পোস্টারে সবুজ-নীল রঙে লেখা রয়েছে, ‘বাংলায় বিকল্প রাজনীতি’। রবিবার সকালে শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশনের পাশে, হাজরা মোড়ে ইন্দিরা গান্ধীর মূর্তির নীচে, রাসবিহারী, গড়িয়াহাট, পার্ক সার্কাস, ধর্মতলা এবং এন্টালিতে কংগ্রেস অফিসের আশেপাশে এই পোস্টার দেখা যায়। একই রকম পোস্টার দেখা যায় কোচবিহারের মাথাভাঙাতেও। পোস্টারে নাম নেই প্রচারক বা প্রকাশকের, যা নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। (Lok Sabha Elections 2024)
বর্ষবরণ ঘিরে শহর যখন উৎসবমুখর, সেই আবহেই রবিবার সকালে শহরের একাধিক জায়গায় ওই পোস্টার চোখে পড়ল। বিকল্প রাজনীতির দাবিতে পোস্টার ধর্মতলা, শ্যামবাজার, রাসবিহারে, হাজরা মোড়, সিআইটি রোড, পার্কসার্কাস একাধিক জায়গায় ওই পোস্টার দেখা গিয়েছে। পোস্টারে কারও নাম নেই যদিও। কাউকে পোস্টার টাঙাতে দেখেছেন বলেও জানাচ্ছেন না কেউ। কলকাতার বাইরে কোচবিহারের মাথাভাঙাতেও একই পোস্টার দেখা গিয়েছে। তবে এই পোস্টার ঘিরেই এখন শোরগোল বাংলার রাজনীতিতে। (Alternative Politics Poster)
এ নিয়ে প্রশ্ন করলে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, "কথাটা শুনতে বেশ ভাল। কিন্তু বিকল্প রাজনীতির অর্থ হচ্ছে, দলের অন্দরে যাঁরা হতাশায় ভুগছেন, তাঁদের পোস্টার এটা। তবে এটা কোন দলের হতাশাগ্রস্তদের পোস্টার, সেটা বলা মুশকিল। ইন্দিরা গাঁধীর মূর্তির নিচে পোস্টার রয়েছে, তাই কংগ্রেসের হতে পারে। আবার গতকাল ভাইপো বলেছেন ডায়মন হারবারের বাইরে কোথাও যাবেন না। হতে পারে তিনি বিকল্প রাজনীতি খুঁজছেন। তাই তৃণমূলের পোস্টারও হতে পারে। সিপিএম-রও হতে পারে ওই পোস্টার। তবে এটা খানিকটা অলীক স্বপ্নের মতো। আজ যেখানে দাঁড়িয়ে প্রাতিষ্ঠানিক রাজনৈতিক দলগুলি, নির্বাচনের আগে বিকল্প রাজনীতি করে দলকে কোথাও টেনে নিয়ে যাওয়া যাবে বা পরিবর্তন আনা যাবে বলে মনে হয় না আমার।"
কংগ্রেসের সৌম্য আইচ রায়ের বক্তব্য, "কালীঘাট এবং ক্যামাক স্ট্রিটের দ্বৈরথ দেখছিলাম দীর্ঘদিন ধরেই। এটা শুধু সময়ের অপেক্ষা ছিল। তৃণমূলে ক্ষমতার কেন্দ্র কার্যত ভাগ হয়ে গিয়েছে এখন। পরস্পরকে মানছে না তারা। এই কালীঘাট এবং ক্যামাক স্ট্রিট এখন আড়াআড়ি বিভক্ত। ভাইপো থাকবে, না পিসি থাকবে, বাংলার মানুষকে এখন ময়ূর সিংহাসনের লড়াই দেখতে হবে। ১৯৯৮ সালে যখন কংগ্রেস ভাঙিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, আমরা জানতাম এটা হবে। এটা ভবিতব্য ছিল। সাপুড়ের মৃত্যু হয় সাপের ছোবলে। মুখ্যমন্ত্রীকে নিজের ঘরও ভাঙতে দেখতে হবে। তৃণমূলের শেষের শুরু হয়ে গেল।"
সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "ভুতুড়ে কাণ্ড হচ্ছে। হঠাৎ করে কলকাতার শহরে পোস্টার পড়ে গেল। বোঝা যাচ্ছে, তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের প্রতিফলন এই পোস্টার। এই বিকল্প রাজনীতি যদি কেউ চান, তাহেল তাঁকে তো বলতে হবে যে চাইছেন। নিজে বলতে পারছেন না, তৃণমূলের সঙ্গে থেকে বিজেপি-কে লক্ষ্যপূরণে সাহায্য করছেন, লুকিয়ে চুরিয়ে এই পোস্টার দিতে হচ্ছে। ছায়াযুদ্ধের মনোভাব নয়ত!"