দীপক ঘোষ, অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়: আগামী ২৪ ডিসেম্বর, ব্রিগেডে লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ কর্মসূচিতে আমন্ত্রিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রামমন্দির উদ্বোধনের আগে মন্দির দর্শনের জন্য সাধারণ মানুষকে আমন্ত্রণ জানানোর কর্মসূচি নিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (VHP)!
তৃণমূল (TMC) পরিচালিত কলকাতা পুরসভার তত্ত্বাবধানে ঘটা করে দেব দীপাবলির আয়োজন করা হচ্ছে। তবে কি লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় ধর্মীয় আবেগে শান দিতে চাইছে শাসক-বিরোধী, সবপক্ষই? উঠছে প্রশ্ন।  (Lok Sabha Elections 2024)


মিশন ২০২৪। কার তূণে কোন তির? পরস্পরকে টেক্কা দিতে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের মতো সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন নানা সমস্যার মতো বিষয়গুলিকে পিছনের সারিতে পাঠিয়ে দিয়ে কি উঠে আসছে ধর্ম? প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ধর্মের নামেই কি ভোট বৈতরণী পার করার চেষ্টায় তৃণমূল এবং বিজেপি? প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন সংগঠনের নির্বাচনমুখী রোডম্যাপ দেখে। (Kolkata News)


রথযাত্রা, রামনবমী, দুর্গাপুজো নিয়ে কখনও তৃণমূল, বিজেপি-র শীর্ষ নেতাদের মাতামাতি অনেকদিন ধরেই দেখছে বাংলা। লোকসভা নির্বাচনের মুখে তা আরও জোরাল হচ্ছে। আগামী ২৪ ডিসেম্বর ব্রিগেড প্য়ারেড গ্রাউন্ডে লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, বিভিন্ন মঠ ও মন্দিরের প্রধানদের নিয়ে একটি মঞ্চ গড়ে এই সমবেত গীতা পাঠের এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদি।


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: 'ক্যাশলেস প্রক্রিয়ায় অর্থনীতির উন্নয়ন হয় না', মমতার নিশানায় ডিজিটাল ইন্ডিয়া!

আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে, ২২শে জানুয়ারি অযোধ্য়ার রাম মন্দিরের উদ্বোধন রয়েছে। তার আগে বাংলার প্রত্যেক বাসিন্দাকে
রাম মন্দির দর্শনের আমন্ত্রণ জানাতে উদ্যোগী হয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।  উল্টো দিকে, তৃণমূলের প্রত্য়ক্ষ কিংবা পরোক্ষ উদ্য়োগে কখনও ইমাম-মোয়াজ্জেম-পুরোহিতদের সমাবেশ করা হয়েছে, আবার পুরির জগন্নাথ মন্দিরের আদলে দিঘায় সুবিশাল মন্দির তৈরি করা হচ্ছে। তৃণমূল সরকারের উদ্যোগে এপ্রিল মাসেই তার উদ্বোধনের কথা।


এর পাশাপাশি তৃণমূল পরিচালিত কলকাতা পুরসভার ঘোষণা অনুযায়ী, বাবুঘাটে মা গঙ্গার মন্দির নির্মাণ করে নিত্য আরতির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে দেব দীপাবলিও। 

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু একবার তাঁর ঘনিষ্ঠ আবিদ হাসানকে বলেছিলেন, "আমাদের আন্দোলনের ভিত্তি হল জাতীয়তাবাদ, এর চরিত্র রাজনৈতিক। এর সঙ্গে কখনও ধর্মকে মিশিয়ে ফেলবে না। ধর্মের নামে যদি একতার চেষ্টা করো, তবে ধর্মের নামে বিভেদ ডেকে আনাও হবে সহজ। আমরা সকলে ভারতীয়, সেটাই আমাদের পরিচয়। আন্দোলনের রাজনৈতিক চরিত্রের সঙ্গে ধর্মকে মিশিয়ে ফেলা ভ্রান্ত নীতি।"


বর্তমানে রাজনীতিবিদরা নিজেদের প্রয়োজন মতো নেতাজির নামের উল্লেখ করেন, মূর্তি বসান, মালা দেন, কিন্তু তাঁর আদর্শকে কি মেনে চলেন? প্রশ্ন উঠছে।