সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া : মেশিন রয়েছে। তা সত্ত্বেও পরিষ্কার করা যাচ্ছে না পুরুলিয়ার সাহেব বাঁধ। ঘটনায় ক্ষুব্ধ পুরুলিয়াবাসী। জেলা পরিষদের দেওয়া কচুরি পানা তোলার জন্য প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার মেশিন ব্যবহার না হওয়ায় তা কার্যত জলেই গেল ! পুরুলিয়া সাহেব বাঁধের কচুরিপানা তোলার মেশিন অকেজো দেখিয়ে পুরসভা আর জেলা পরিষদের 'দ্বন্দ্বে'র কারণে এগোয়নি কাজ। মেশিন উদ্বোধনের পরে ২ মাস কেটে গেলেও, পুরসভা হস্তান্তর নিতে অস্বীকার করল। ফলে, এই মেশিন ফেরত পাঠানো ছাড়া কোনও পথ রইল না। 


পুরুলিয়া জেলা পরিষদকে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের দেওয়া এই কচুরিপানা পরিষ্কারের যন্ত্রটি কার্যকর না হওয়ায় পুরুলিয়া পুরসভা তা নিতে অস্বীকার করল। তাদের বক্তব্য, এই মেশিনটি পুরুলিয়া সাহেব বাঁধকে পরিষ্কার করতে পারবে না।
গত অক্টোবর মাসের ২৬ তারিখে সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাত ও প্রশাসনিক কর্তাদের উপস্থিতিতে এর উদ্বোধন করেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু। সেদিন পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হলেও, পরে আর এই মেশিনটিকে দিয়ে কচুরিপানা পরিষ্কার করা যায়নি। কথা ছিল, এই মেশিনটি দিয়ে শহরের সাহেব বাঁধ সহ অন্যান্য বড় বড় পুকুর থেকে কচুরি পানা পরিষ্কার করা হবে। কিন্তু পরিষ্কার করা তো দূর অস্ত, মেশিনটি নিতে অস্বীকার করছে পুরসভা।


শহরের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্পোরেট সামাজিক দায়িত্ব থেকে পাওয়া এই মেশিনটি পড়ে পড়েই নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে, সাহেব বাঁধে কচুরি পানায় ভরে গেছে। আর এই কচুরিপানার জন্য পরিযায়ী পাখি আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে আর্থিক সংকটে ভুগছে এই পুরসভা। তাই সাহেববাঁধ পরিষ্কারের কাজ কবে শুরু হবে সেটাই এখন প্রশ্ন।


বর্ধমানের ঘটনার জের-


এদিকে বর্ধমানে শতাব্দী প্রাচীন জলের সুউচ্চ ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ার পর নড়েচড়ে বসেছে রেল কর্তৃপক্ষ। এবার পূর্ব রেলের সব ট্যাঙ্কের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ভাবনা রেলের। নিরাপত্তার স্বার্থে ট্যাঙ্ক এলাকায় থাকা বস্তিবাসী ও দোকানদারের অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ।


বর্ধমান স্টেশনে ১৮৯০ সালের জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের, জখম ৩৯ জন। ঘটনার পর আতঙ্ক রয়েছে। শুধু এই ট্যাঙ্কই নয়, বর্ধমান স্টেশনের ৮ নম্বর প্লাটফর্মের বাইরে থাকা ১৯৩৫ সালে তৈরি একই প্রকার ট্যাঙ্ক ও রেলের আবাসন এলাকায় থাকা আরও একাধিক ট্যাঙ্ক ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে যে কোনও মুহূর্তে আবার দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন। যদিও কিছু ক্ষেত্রে রেলের তরফে ট্যাঙ্ক চত্বর এলাকায় থাকা বস্তিবাসী ও দোকানদারদের অন্যত্র সরে যেতে বলা হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।


পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া, মালদা, আসানসোল ও শিয়ালদহ ডিভিশনের সব স্টেশনে পুরনো জল ট্যাঙ্কগুলি আধুনিক পদ্ধতিতে ‘স্বাস্থ্য পরীক্ষা’ করা হবে। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।