কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : ব্যারাকপুরে সোনার দোকানে ডাকাতি-খুনের ঘটনায় দুজন গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা নিয়ে তৃণমূলের ( TMC )  গৃহযুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ নেই। প্রথমে অর্জুন সিং ( Arjun Singh) পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হওয়ার পর, এবার বাগযুদ্ধে জড়ালেন সৌগত রায় আর মদন মিত্র। নেতাদের অসন্তোষ সামলাতে তড়িঘড়ি অর্জুন সিং, সৌগত রায় ( Saugata Roy )  আর মদন মিত্রের ( Madan Mitra )  সঙ্গে বৈঠক করেন তাপস রায়। কিন্তু বাক্যবাণ বন্ধ হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই। ফের সম্মুখসমরে দলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় এবং বিধায়ক মদন মিত্র।


গত বৃহস্পতিবার সোনার দোকানে খুনের ঘটনার পরই, পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল ফেরা, ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। যার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন সৌগত রায়। অর্জুন সিংহ বলেন, 'একজন সাংসদ হিসাবে লজ্জা হয়েছে কালকে, আমি এতো নিরাপত্তা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি, আর আমার এলাকার মধ্যে একজন ২৭ বছরের ছেলে খুন হয়ে গেল, খুন করে দেওয়া হল।' 


প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ' অর্জুন সিংয়ের এমনটা বলা ঠিক হয়নি। পার্টির কাছে বলতে পারতেন! মুখ্যমন্ত্রীকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে বলতেন! ওর বক্তব্যের কোনও বেসিস আছে বলে আমি মনে করি না।' 


এই প্রেক্ষাপটে অবশ্য অর্জুন সিংহর পাশেই দাঁড়িয়েছেন মদন মিত্র। এরপরই তাঁর সঙ্গে সৌগত রায়ের তীব্র মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে, রবিবার তিন জন প্রতিনিধির সঙ্গেই কথা বলেছেন দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি তাপস রায়। তিনি বলেন, ' তিনজনের সঙ্গেই কথা হয়েছে। জেলা সভাপতি হিসেবে কথা বলেছি। ওরা কথা দিয়েছে, যা বলে ফেলেছে তা তো আর ফেরত নিতে পারবে না!  আর এগোবে না!  আমাদের দল তো আয়রন কার্টন এর মত নয়! গণতন্ত্র রয়েছে, এটা তারই পরিচয়। দেখি এরপর কি হয়?' কিন্তু, এরপরও থেমে থাকেনি সৌগত রায় ও মদন মিত্রর বাদানুবাদ। 


প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত বলেন,' কামারহাটি একটা ডিস্টার্ব এলাকা থাকে। যখন তখন বোমা পড়ে। সেটা যাতে না হয় তার জন্য পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা দরকার। আমি সেটাই বলেছি।'


পাল্টা মদন মিত্র বলেন, 'কামারহাটি থেকে একটা বাজিও উদ্ধার হয়নি। অথচ ,উনি যা বলছেন, তাতে কামারহাটির থানার মনোবল ভেঙে দেওয়া। এটা সঠিক নয়।'


'জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি কখনও সমাজবিরোধী বা মস্তানকে নিয়ে গাড়িতে ঘুরি না। আমার পিছনেও কোনও গাড়ি থাকে না। অনেক এমপি এসকট নিয়ে ঘোরে। বাতি জ্বালিয়ে। কিন্তু আমি ঘুরি না। ওটা আমার স্টাইল। তাতে যা হয় হবে!' বলেন সৌগত রায় । 


পাল্টা মদন মিত্র বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি মনে করেন, তাহলে আমাকে আর দেবেন না! আর সৌগত দা নিজের ইচ্ছায় নিরাপত্তা ছাড়েননি। সরকারের মনে হয়েছে যে ওনার বয়স হয়েছে। আপনাকে এখন আর কেউ নিতে চাইছে না।'


সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন, তার আগেই আর কয়েক দিনের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় ঢুকবে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জনসংযোগ যাত্রা। সামনের বছর লোকসভা নির্বাচন। তাঁর আগে কি থামবে তৃণমূল বর্ষীয়ান সাংসদ ও তারকা বিধায়কের কাদা ছোড়াছুড়ি?