কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রীর। তা নিয়ে সংঘাত দেখা দিয়েছে দলের অন্দরেই। কিন্তু এ সবের মধ্যে পড়তে চান না কামারহাটির তৃণমূল (TMC) বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। মদনের দাবি, তিনি এক জন বিধায়ক মাত্র। বড় বড় লোকজনকে নিয়ে কথা বলতে গেলে না খেয়ে মরতে হবে তাঁকে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কোনও রকম দুর্নীতির পক্ষে নন, সে কথা জোর দিয়ে বলতে শোনা যায় মদনকে। 


দলীয় সংঘাত নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ মদন


এসএসসি-র গ্রুপডি নবম-দশম নিয়োগ দুর্নীতিতে (SSC Reruitment Scam) নাম জড়িয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)। তিনি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন ওই দুর্নীতি হয় বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সামনে তাঁকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশও দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নিয়ে টানাপোড়েন চলছে তৃণমূলের অন্দরেও। পার্থর আমলে দুর্নীতি হয়েছিল, তাই তাকেই জবাব দিতে হবে, এ ব্যাপারে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর  কোনও দায় নেই বলে জানিয়ে দেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। 


কুণালের এই মন্তব্যে তৃণমূলের আন্দরে ফাটল যে চওড়া হয়েছে, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। কারণ পার্থর পাশে দাঁড়িয়ে কুণালকে পাল্টা কটাক্ষ করতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। সেই পরিস্থিতিতে তাঁর অবস্থান জানতে চাইলে মদন বলেন, "আমার মুখও নেই, পাত্রও নেই। আমি এক জন চুনোপুঁটি বিধায়ক মাত্র। পার্থ-কুণালকে নিয়ে কিছু বললে না খেয়ে মরতে হবে। কুণাল কেন বলেছে, তার উত্তর কুণালই দিতে পারবে। আমি শুধু বলব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্নীতিমুক্ত ভাল প্রশাসন দিতে চেয়েছিলেন এবং এখনও চান।"


আরও পড়ুন: Firhad on Jagdeep Dhankar: 'এক্তিয়ারের মধ্যে থাকুন', রাজ্যপালের আক্রমণের পাল্টা ফিরহাদ।Bangla News


পর পর যে ভাবে পার্থকে আক্রমণ করে চলেছেন কুণাল, দলের সমর্থন না থাকলে তা কী ভাবে সম্ভব, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। এ ব্যাপারে মদনের বক্তব্য, "কেউ কিছু বললে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি দেখবে। দলে নিশ্চয়ই কথা চলছে, কথা না বলে কেউ কথা বলতে পারে না। তা ছাড়া দলের তো শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি রয়েছে! আমাকেও শোকজ করা হয়েছিল, যার উত্তর দিয়েছিলাম আমি। বাবার বাড়িতে থাকব, বাবার টাকায় খাব, আর বাবার কথা শুনব না, তা কখনও হয় নাকি!"


এসএসসি দুর্নীতির প্রসঙ্গে পড়তে চান না মদন


পার্থ না ব্রাত্য, কার আমলে দুর্নীতি হয়েছে, বিষয়টি বিচারাধীন তাই কিছু বলতে চান না বলে জানান মদন। তবে পার্থর সঙ্গে ইদানীং কালে তার সম্পর্কও যএে আর মধুর নেই, তা ঢের আগেই সামনে এসেছে। পৌরসভা নির্বাচনের সময় প্রার্থিতালিকা নিয়ে যখন দিকে দিকে  বিক্ষোভ চলছে, সেই সময় পার্থর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মদন। মমতা দায়িত্ব দিলেও, পার্থ আদৌ বাংলার মানুষকে, দলের কর্মীদের চেনেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মদন। জবাবে মদনের কথায় কিছু যায় আসে না বলে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দেন পার্থ। একই বিষয়ে কুণালের সঙ্গেও বিবাদ বাধে মদনের।