সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: দিন দিন বাড়ছে টোটোর সংখ্যা। হাজার বলেও হচ্ছে না কাজ। টাকা নিয়ে নতুন টোটো ইউনিয়নে ঢুকিয়ে দিচ্ছে নেতা। সেই অভিযোগে টোটো চালানো বন্ধ রাখল টোটো চালকরা। আর তার জেরেই ভোগান্তির শিকার হল মধ্যমগ্রাম এলাকার মানুষ।


প্রখর রোদে মাথার চাঁদি ফাটার জোগাড়। তার মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেও মিলছে না টোটো। সোমবার থেকে এভাবেই চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের বাসিন্দাদের।  


আর ভোটের মুখে মধ্যমগ্রামে টোটো বন্ধের ঘটনাতেও জড়িয়ে গেছে রাজনীতি। অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। কারণ স্থানীয় টোটোচালকদের একাংশের অভিযোগ, লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে নতুন অটো ইউনিয়নে ঢুকিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতা ও মধ্যমগ্রাম পুরসভার উপ পুরপ্রধান প্রকাশ রাহা। 


তাঁদের দাবি, টোটোর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে আয় কমে যাচ্ছে। তারই প্রতিবাদে আপাতত টোটো বন্ধ রেখেছেন চালকরা। মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রী ঝর্ণা ব্রহ্ম বলেন, 'টোটো পাচ্ছি না যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। এরকম যখন তখন বন্ধ করে দিলে কী হয়'। 


মধ্যমগ্রামের টোটোচালক গৌতম পাত্র বলেন, 'আমাদের আগে ৭০-৮০ টা টোটো ছিল। এখন বর্তমানে আমাদের সেক্রেটারি মহাশয় উনি ১১৬টা টোটো হয়ে ঢুকিয়ে দিয়েছে। নতুন নতুন টোটো ঢুকিয়ে যাচ্ছে। এক একজেনের থেকে দুই লক্ষ, আড়াই লক্ষ, তিন লক্ষ টাকা নিচ্ছে। উনি পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।' টাকা যে নেওয়া হয়েছে, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূল পরিচালিত মধ্যমগ্রাম স্টেশনের টোটোর ইউনিয়নের সম্পাদক। 


আরও পড়ুন, দেবের মুখে শোনা গেল জয় শ্রীরাম ধ্বনি, রামনবমীর মিছিলেও পা মেলালেন ঘাটালের TMC প্রার্থী


মধ্যমগ্রাম স্টেশন টোটো ইউনিয়নের সম্পাদক সমীর সাধুখাঁ বলেন, 'উপর নেতৃত্ব সব জানে। সেক্রেটারি বলতে পারবে কার কাছে যাচ্ছে টাকা। আমরা হিসাব পাচ্ছি না আমরা গাড়ি স্ট্রাইক করেছি।' 


ভোটের মুখে মধ্যমগ্রামের এই ঘটনায় কার্যতই অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। অন্যদিকে কটাক্ষ করতে দেরি করেনি বিজেপি। বারাসাত সাংগঠনিক জেলার বিজেপির জেলা সম্পাদক জয়দেব পাল বলেন, 'এখন তৃণমূল  তোলাবাজি করছে। গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুরে। এর বাইরে এরা আর কিছু জানে না। এখানে টাকার বিনিময়ে অটো, টোটো, সর্বক্ষেত্রে  টাকার বিনিময়ে অটো ঢুকিয়ে যাচ্ছে, টোটো ঢুকিয়ে যাচ্ছে'।


আর দলেরই অন্দর থেকে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ও মধ্যমগ্রাম পুরসভার উপপুরপ্রধান। মধ্যমগ্রাম পৌরসভার তৃণমূল নেতা ও উপ পুরপ্রধান প্রকাশ রাহা বলেন, 'আমি ছিলাম না সম্পূর্ণ মিথ্যে। আমি ছিলামই না। টাকা পয়সার কোনও ব্যাপার নেই।' 


তবে রাজনৈতিক এই কথার লড়াইয়ের মাঝে, তিন দিন ধরে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।