জামুড়িয়া : বাসন্তী পোদ্দার, উর্মিলা ভুঁইয়ার পর এবার বিনোদ রুইদাস। অমৃতস্নানে গিয়ে মৃত। প্রয়াগের মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্য়ু হয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার বাসিন্দা বিনোদ রুইদাসের। আজই তাঁর দেহ ফিরিয়ে আনা হচ্ছে জামুড়িয়ার কেন্দার বাড়িতে। পরিবার ও পুলিশ সূত্রে খবর, মৌনী অমাবস্যার স্নানকে ঘিরে যেখানে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে, সেখানেই পড়েছিল বিনোদ রুইদাসের মোবাইল ফোন। তা কুড়িয়ে পান অন্য এক পুণ্যার্থী। তিনিই বিনোদ রুইদাসের পরিবারকে ফোন করে জানান, বিপর্যয়স্থলে পড়েছিল মোবাইল ফোনটি। তারপরই বিনোদের সঙ্গে যাওয়া লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিবার। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, বিনোদের মৃত্যু হয়েছে। 


ভয়াবহ, মর্মান্তিক, মহাবিপর্যয়। পরিস্থিতি বর্ণনার জন্য যেন কোনও শব্দই উপযুক্ত নয় ! অমৃতকুম্ভের সন্ধানে গিয়ে ফিরছে নিথর দেহ ! মৌনি অমাবস্যায় মহাকুম্ভে মমান্তিক দুর্ঘটনা। স্নানের জন্য হুড়োহুড়িতে ব্যারিকেড ভেঙে পদপিষ্ট হন বহু মানুষ। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩০ জনের। গুরুতর আহত হয়েছেন শতাধিক পুণ্যার্থী। গ্রিন করিডর করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রিয়জনের খবর জানতে হাসপাতালের সামনে উদ্বিগ্ন পরিজনেরা ভিড় জমান। মর্গের সামনেও জড়ো হন অনেকে। মহাকুম্ভের মেলা প্রাঙ্গণে প্রিয়জন হারানোর হাহাকার। ভোর ৫টায় শাহি স্নানের কথা ছিল। তার আগে মাঝরাত থেকেই মহাকুম্ভের নানা ঘাটে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী ভিড় জমিয়েছিলেন। রাত ২টো নাগাদ সঙ্গমের কাছে ভিড়ের চাপে ব্যারিকেড ভেঙে যায়। তার মধ্যেই অনেকে দৌড়তে শুরু করায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। তুমুল ধাক্কাধাক্কি, চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। হুড়োহুড়িতে পড়ে গিয়ে বহু মানুষ আহত হন। এই আবহে প্রশ্ন উঠছে এই ঘটনার দায় কার ? মহাকুম্ভের DIG বৈভব কৃষ্ণ জানিয়েছেন, "রাত ১টা থেকে ২টোর মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। পদপিষ্ট হয়ে ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।'' 


মহাকুম্ভে পুণ্যস্নানে গিয়ে প্রাণ গেল এরাজ্যের একাধিক বাসিন্দার। বিজয়গড়ের মৃত পুণ্যার্থীর দেহ ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই প্রয়াগরাজ থেকে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুললেন স্থানীয় কাউন্সিলর। এমনকী, দেহ হস্তান্তরের নথিতে কোনও সরকারি আধিকারিকের সই নেই বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। প্রয়োজনে FIR করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্ত। মহাকুম্ভে পুণ্যস্নান করতে গিয়ে ফেরা হল না পশ্চিম মেদিনীপুরের এক বাসিন্দারও। শালবনির গোদাপিয়াশালের বাসিন্দা ঊর্মিলা ভুঁইয়া। দুই মেয়ে, জামাই, আত্মীয়দের নিয়ে তিনিও সোমবার গেছিলেন প্রয়াগরাজে। পরিবারের দাবি, মঙ্গলবার রাতে হুড়োহুড়ির সময় বৃদ্ধা আলাদা হয়ে যান। বুধবার সকালে মেলা প্রাঙ্গণে, হাসপাতালে খোঁজ নিতে গিয়ে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন, পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।