করুণাময় সিংহ, মালদা: পুরভোটের প্রার্থী তালিকা নিয়ে তৃণমূলে (TMC) বিক্ষোভ তীব্রতর হচ্ছে। এ বার নিজের প্রার্থীপদ (TMC Municipal Candidate List) প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিলেন ইংরেজবাজারের (English Bazar News) তৃণমূল নেতা। তাঁর সুপারিশ করা দু’জনকে টিকিট দেওয়া হয়নি বলেই নিজের প্রার্থীপদ প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এমনকি দলে থাকবেন কি না, সে নিয়েও ভাবনা চিন্তা শুরু করে দিয়েছেন বলে দাবি ওই নেতার।


মালদার (Malda News) ইংরেজবাজারে তৃণমূলে সভাপতি (শহর) তথা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি। এ বারে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। কিন্তু নরেন্দ্রনাথের দাবি, ২২ এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য দু’জনের নাম সুপারিশ করেছিলেন তিনি, যা কি না ধর্তব্যের মধ্যেই আনা হয়নি দলীয় নেতৃত্বের তরফে।


যে ২২ এবং ২৩ নম্বরক আসনকে ঘিরে বিতর্ক, সেই দু’টি আসন সংরক্ষণের আওতায় পড়ে। বেশ কয়েক বছর ধরে সেখানে জিতে আসছেন নরেন্দ্রনাথ এবং তাঁর স্ত্রী। কিন্তু নরেন্দ্রনাথের অভিযোগ, তিনি যে নাম পাঠিয়েছিলেন, প্রার্থী তালিকা থেকে তা বাদ পড়েছে। এ নিয়ে দল তাঁর সঙ্গে আলোচনাও করেনি বলে দাবি তাঁর।


বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নরেন্দ্রনাথ। তিনি জানিয়েছেন, আগামী দিনে তৃণমূল করবেন কি না, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করে দিয়েছেন। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের দাবি, এ নিয়ে কিছু জানা নেই তাঁদের। রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানানো হবে। নরেন্দ্রনাথের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া যাবে বলে আশাবাদী তাঁরা। তবে এই ঘটনায় তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। তাদের দাবি, তৃণমূল যে কোনও সাংগঠনিক দল নয়, এটাই তার প্রমাণ।


আরও পড়ুন: Weather: বিদায়ের আগে ঝোড়ো ব্যাটিং শীতের, দু'দিনে ৬ ডিগ্রি নামল পারদ|Bangla News


উল্লেখ্য, পুরভোটের (WB Municipal Polls 2022) আগে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘিরে অশান্তি দেখা দিয়েছে রাজ্যের প্রায় সব প্রান্তেই। অতি সম্প্রতি বিজেপি থেকে দলে আসা নেতা, যাঁরা কি না বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কাজ করেছিলেন, তাঁদের কোন যুক্তিতে প্রার্থী করা হচ্ছে, প্রশ্ন তুলেছেন জোড়াফুল শিবিরের কর্মী-সমর্থকরা। এমনকি বিশেষ কারও ঘনিষ্ঠদেরই টিকিট পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ সামে এসেছে।


একাধিক জায়গায় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেও, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রার্থী বদল করা হয়েছে। তা নিয়েও ক্ষোবের মুখে পড়তে হচ্ছে তৃণমূলকে। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে, পথ অবরোধ করে জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা। দল ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিতে শোনা গিয়েছে কাউকে কাউকে।


এমন পরিস্থিতিতে বিক্ষুব্ধদের প্রতি সমব্যথী হতে দেখা গিয়েছে কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রকে। পাশ করবে জেনেও পরীক্ষায় ফেল করলে দুঃখ হবেই বলে মনে করছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও লিখবেন বলে জানিয়েছেন মদন। অন্য দিকে, ফিরহাদ হাকিম সকলের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন যে, সব সময় টিকিট পাওয়া যায় না। একটা সময় তিনিও বহু বার টিকিট পাননি। তাই ধৈর্য ধরে দল করে যেতে হবে। যোগ্য ব্যক্তি সুযোগ নিশ্চয়ই পাবেন।