করুণাময় সিং, মালদা: নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি মালদার ভূতনির কেশবপুরে। সেখানে গঙ্গার বাঁধ ভেঙে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যেই সেখানকার একাধিক গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করেছে। যদিও অস্থায়ী বাঁধ এর মাধ্যমে জল আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি ঠিক করা সম্ভব হয়নি।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গঙ্গার জলে ভেসে যায় বাঁধার প্রায় ৭০ মিটার অংশ।
এদিকে এই ঘটনার পর থেকে বন্যার ভ্রুকুটি দেখা দিয়েছে। এই আবহে ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক, ব্লক অফিসের কর্মী ও সেচ দপ্তরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করল জেলা প্রশাসন। চরম বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গঙ্গা। জল বাড়ছে মালদার ফুলহার মহানন্দারে। ইতিমধ্যেই গঙ্গার জলে প্লাবিত হয়েছে রতুয়া ১ নম্বর ব্লক ও মানিকচক ব্লকের ২৭টি গ্রাম।
বন্যার জেরে জলবন্দি রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। মানিকচকের গদাইচর ও নারায়নপুর চর থেকে মানুষকে সরানোর কাজ আরম্ভ করেছে প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ত্রাণ শিবির গুলিকে। প্লাবিত গ্রামগুলির বাসিন্দাদের উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কোন রকম বিপর্যয়ের জন্য প্রস্তুত রয়েছে প্রশাসন। এরই পাশাপাশি কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকে ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে মানুষকে ত্রাণশিবিরে স্থানান্তর করা হয়েছে।
পাশাপাশি মালদার মানিকচকে তিনটি গ্রামে গঙ্গার জল ঢুকতে শুরু করেছে। মানিকচকের জোতপাট্টা, রামনগর রবিদাসটোলা- এই তিনটি গ্রামে হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করেছে। কয়েকশো পরিবার জলবন্দি। প্রশাসন সূত্রে খবর, গঙ্গার পাড় থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার জন্য জেলার সেচ দফতরের তরফে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বেশ কিছু পরিবার নিজেরাই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। উঁচু জায়গায় ত্রিপল খাটিয়ে ব্যবস্থা হয়েছে সাময়িক আশ্রয়ের।
জেলাশাসক জানিয়েছেন, রতুয়া ১, মানিকচক, কালিয়াচক ২ ও ৩ নম্বর এলাকার বিডিওদের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে বলা হয়েছে। মজুত রয়েছে ত্রাণসামগ্রী। দুর্গতদের ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসা হবে।