করুণাময় সিং, মালদা: যত সময় এগোচ্ছে রাজ্যের নানা এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে। এবার কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের বীরনগর এলাকায় ক্রমশ বাড়ছে ভাঙনের তীব্রতা। গঙ্গা গিলে খাচ্ছে একের পর এক বাড়ি, কৃষিজমি। ইতিমধ্যেই গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে ৭০টিরও বেশি বাড়ি। ১৫০ বিঘা কৃষিজমি তলিয়েছে নদীতে। বৃষ্টির জেরে জলস্তর বাড়তেই রুদ্র মূর্তি ধারণ করেছে গঙ্গা।


মালদার কালিয়াচক থানা এবং বৈষ্ণব নগর থানা এলাকার ছয় থেকে সাতটি গ্রাম গঙ্গাগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। ভীমা গ্রাম, লালু টোলা, মোল্লা টোলা, নাসির টোলা, হাতিচাপা গ্রামের প্রায় শতাধিক বাড়ি ভেঙে তলিয়ে গিয়েছে নদীতে। ইতিমধ্যেই গৃহহীন হয়েছে শতাধিক। অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদ স্থানে সড়ে গিয়েছেন। 


বেশ কিছু এলাকায় ত্রাণ শিবিরের ব্যবস্তা করা হয়েছে। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বহু গৃহহীন মানুষ। ভাঙন রোধে প্রশাসন, সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। 


এদিকে, মালদার বৈষ্ণবনগরে গঙ্গায় শুরু হয়েছে ভাঙন। লালুটোলা এলাকায় নদী গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে বাড়িঘর, বিঘার পর বিঘা কৃষি জমি। দুর্গতদের ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়েকদিন ধরেই ভাঙন শুরু হয়েছে। দুর্বল নদী বাঁধের কারণেই ভাঙন বলে অভিযোগ। এনিয়ে প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।


এদিকে, টানা বৃষ্টির জের এবং নদী বাঁধ ভাঙায় হুগলির আরামবাগ, গোঘাটের পর এবার প্লাবিত হয়েছে খানাকুল। তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। রূপনারায়ণ ও দ্বারকেশ্বরের জলে ভাসছে খানাকুলের একাধিক গ্রাম। বড় বড় বাড়ি গুলি জলে পড়ে রয়েছে। কোনওটা আবার পুরোটাই ভেঙ্গে গিয়েছে। যার ওপর দিয়ে এখনও জল বয়ে যাচ্ছে। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বাড়ির লোকজন আপাতত নদীর বাঁধেই আশ্রয় নিয়েছেন। খানাকুলের ধান্যঘোড়ি ও বন্দর গ্রামের হাল এরকমই। দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ায় নতুন করে বিস্তীর্ণ এলাকায় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।