অভিজিৎ চৌধুরী, মালদা: মধ্যযুগীয় বর্বরতা ! ডাইনি সন্দেহে গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ মালদায়(Malda News)। স্থানীয়দের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচলেন গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ইংলিশ বাজার ব্লকের যদুপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের জহরাতলা গোবিন্দপুর এলাকায়। ঘটনায় পুলিশ ওই গৃহবধূর পুত্রবধূ সহ তাঁর এক আত্মীয়কে আটক করেছে পুলিশ।


পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ : আক্রান্ত ওই গৃহবধূর অভিযোগ, কয়েক বছর আগে তাঁর দুই ছেলে পরপর অসুস্থ হয়ে মারা যায়। এরপর থেকেই তাঁকে ডাইনি অপবাদ দেয় তাঁর পুত্রবধূ। এছাড়াও তাঁর ছেলে এবং পুত্রবধূর মধ্যে মাঝেমধ্যেই কলহ লেগে থাকে। সেই ক্ষেত্রেও তাঁকে ডাইনি অপবাদ দেওয়া হয়। ডাইনি অপবাদে মাঝেমধ্যেই মারধর করা হয় তাঁকে। অভিযোগ, এদিনও তাঁকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করছিল তাঁর পুত্রবধূ। লোকজন চলে আসায় প্রাণে বাঁচেন তিনি। এই ঘটনায় ইংলিশ বাজার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই গৃহবধূ। যদিও গৃহবধূর ছেলের দাবি এটি একটি পারিবারিক গন্ডগোল। এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ মালদা শাখার সভাপতি সুনীল দাস জানান, "ডাইনি সন্দেহে খুন বা পুড়িয়ে মারার চেষ্টা প্রকৃতি পক্ষে এই ধরনের ঘটনা আমাদের জেলায় নেই। এখন যে ধরনের ঘটনাগুলি করছে আপনারা দেখবেন হয় পারিবারিক গন্ডগোল না হলে জমি নিয়ে গন্ডগোল। জহতলা গোবিন্দপুর এর ঘটনাটি ঠিক সেই রকমই। তবে অবশ্যই আমরা প্রয়োজনে ওই গৃহবধূর বাড়ি যাব।''                                 


যদিও এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে ডাইনি সন্দেহে দুই আদিবাসী মহিলাকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। ঘটনাটি ঘটে বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানার হরিষরা আদিবাসী পাড়া গ্রামে।  তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর রাত ১১টা নাগাদ গ্রামের পাশে একটি কাঁদোর থেকে দুই মহিলার মৃতদের উদ্ধার করে ময়ূরেশ্বর থানার পুলিশ। মৃতের নাম খেপি মুর্মু(৪৫) এবং ডলি হেমব্রম (৩৫)। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মৃত দুই মহিলাকেই পিটিয়ে মারা হয়। এমনকি শরীরে ধারলো অস্ত্রের আঘাত ছিল। পুলিশ তদন্ত করে ছয় জনকে আটক করে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে রামপুরহাট মর্গে পাঠায়। এই ঘটনার ৬ মাস কাটতে না কাটতেই ফের একই ধরনের ঘটনা ঘটল এরাজ্যে।