অভিজিৎ চৌধুরী, মালদা: রদবদল নিয়ে ফের ক্ষোভ। মুর্শিদাবাদের পরে এবার মালদায় (Malda)। তবে এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ক্ষোভ দেখালেন জেলার এক তৃণমূল নেতা। ঘটনাস্থল মালদা।
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের (North Bengal) কয়েকটি জেলার পাশাপাশি, মালদাতেও ব্লক স্তরে রদবদল করেছে তৃণমূল। সম্প্রতি হওয়া সেই রদবদলের পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মালদার এক তৃণমূল নেতা। সেখানে দলের বিধায়ককেই নিশানা করেছেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি।
কী বলেছেন তিনি?
তৃণমূল নেতা মনোজ রাম তাঁর ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, '২০০৭ থেকে নিজের জীবনের অর্ধেক সময় দলকে দেওয়ার পর আজ আমাদের রাজনৈতিক কোনও পরিচয় নেই। বর্তমান পরিচয়, MLA আমাদের মালিক, আমরা তাঁর চাকর।'
কী নিয়ে ক্ষোভ:
সম্প্রতি তৃণমূলের তরফে হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লক সংগঠনকে দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি হরিশ্চন্দ্রপুর 1A ও অন্যটি হরিশ্চন্দ্রপুর 1B করা হয়েছে। এই ভাগ কেন করা হয়েছে, সেই প্রশ্নই তুলেছেন তুলসিহাটার অঞ্চল সভাপতি মনোজ রাম।
কোথায় বদল:
ব্লক স্তরে রদবদলের পর দেখা গিয়েছে, মোশারফ হোসেনকে হরিশ্চন্দ্রপুর 1A ব্লকের সভাপতি করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, যিনি হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃণমূল বিধায়ক তাজমুল হোসেনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে, হরিশ্চন্দ্রপুর 1B ব্লকের সভাপতি করা হয়েছে মানিক দাসকে। যিনি আবার চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে ফেসবুকে, তৃণমূল নেতা মনোজ রাম কটাক্ষ করেছেন, বিধায়ক দলের মহাসম্পদ। যিনি বুথ কর্মী, অঞ্চল সভাপতিদের ন্যূনতম সম্মানটুকু দেন না। মনোজ রাম বলেন, 'এটা সম্পূর্ণ বিধায়কের সিদ্ধান্তে করা হয়েছে। এইভাবে একটি ব্লককে দুইটি ভাগে ভাগ করার কোনও মানে হয় না। হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা থেকে সভাপতিদের নিয়ে এসে জোর করে বসানো হয়েছে। প্রত্যেকটা অঞ্চলে নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ হচ্ছে পরবর্তীকালে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ হবে। অনেকে মুখ খুলছে অনেকে খুলতে পারছে না। মুখ খোলার জন্য দল থেকে আমাকে বহিষ্কার করাও হতে পারে।' তিনি পোস্টে বলেছেন, 'দলকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে যাঁদের হাতে রক্ত ঝরেছে তাঁরাই এখন দলের নেতা।'
বিধায়কের দাবি:
চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) নীহাররঞ্জন ঘোষের দাবি, 'ব্লক কমিটি কি ভাবে নির্বাচিত হবে কারা কারা ব্লক কমিটিতে থাকবে নির্ধারণ হয় রাজ্য কমিটি থেকে। এতে দলের বিধায়ক কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। দলের কোন কর্মী যদি ভাবে এর পিছনে দলের বিধায়কের কোনও ভূমিকা রয়েছে তাহলে সেটা ভিত্তিহীন। যারা এগুলো বলছে তারা বলুক আগে বিধানসভা ভোটে বুথ থেকে কতগুলো ভোট করিয়েছে।'
খোদ দলের অঞ্চল সভাপতি এমন বক্তব্য রাখায়, শাসকদলের মধ্যে কোন্দলের অভিযোগ তুলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, 'তৃণমূল দলটার মালিক হচ্ছে মমতা এবং অভিষেক। বাকি সবাই এরা চাকর-বাকর। দলের মধ্যে কোনও গণতন্ত্র নেই। দলে একটাই পোস্ট বাকিরা সব ল্যাম্প পোস্ট। দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে শাসক দল। মানুষ সবই বুঝতে পারছে। আস্তে আস্তে এই দলটা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কবলে পড়ে শেষ হয়ে যাবে।'