রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: শাসক শিবিরের অন্দরের ক্ষোভ এবার দেখা গেল মুর্শিদাবাদে। সম্প্রতি তৃণমূলের তরফে বেশ কিছু জেলায় ব্লক স্তরে পদে রদবদল করা হয়েছে। সেই মতোই মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ভগবানগোলায় তৃণমূলের নতুন ব্লক সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেই তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয় এলাকায়। নতুন ব্লক সভাপতিকে মানতে না চেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ।
মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে আহসানুর রহমান ওরফে বাপনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কার্যত নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভ শুরু করেছেন ভগবানগোলার তৃণমূলের (TMC) একটি অংশ। বুধবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে আন্দোলন। ক্ষোভ এতটাই চরমে উঠেছে যে ভগবানগোলার তৃণমূল কার্যালয়ে তালাও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতে বিক্ষোভ হওয়ার পরে ফের সকালেও বিক্ষোভ শুরু হয়।
কিন্ত কেন এত ক্ষোভ:
বিক্ষোভকারীদের দাবি, আহসানুর রহমান এলাকায় বহিরাগত। বিক্ষোভকারীদের দাবি, আহসানুর আইপিএলের জুয়া খেলার সঙ্গে যুক্ত। এর আগে নাকি সিপিএম করতে তিনি। পরে তৃণমূলে যোগদান করেন। তৃণমূলের কোনও কর্মীদের সঙ্গে ওঁর কোনও যোগ নেই বলেও দাবি বিক্ষোভকারীদের।
ভগবানগোলা ১-এর সদ্য অপসারিত ব্লক সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, 'ছেলেটা যাকে আজ সভাপতি করা হয়েছে, তিনি আইপিএলে জুয়া খেলেন। তার নামে প্রচুর ডেপুটেশন আছে। ভগবানগোলা ও তার বাইরেও জুয়া খেলেন আইপিএলে। স্বপন গরমুরে বলে একজন আছে প্রমোটার। সেই প্রমোটারের সঙ্গে তার ওতপ্রোত যোগ রয়েছে। সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত।'
বুধবার রাতে আহসানুর রহমান বাপনের নাম ঘোষণার পর তাঁর পাশে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতা মোস্তাফা শেখকে। দিনকয়েক আগে ভগবানগোলার বিধায়ক ইদ্রিস আলির বাড়িতে ভাঙচুর চালান স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের কয়েকজন। সেই ঘটনায় অভিযোগে তির উঠেছিল মোস্তফা শেখের দিকে। অন্যদিকে ভগবানগোলার তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিস আলি ঘোষিত ব্লক সভাপতির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। যদিও এলাকা সূত্রে খবর, নতুন ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা বিধায়কের অনুগামী বলেই এলাকায় পরিচিত। গোটা বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাননি আহসানুর রহমান। সবাইকে নিয়ে চলার কথা জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, 'সবাইকে নিয়ে চলতে চাই, সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। আমাকে দায়িত্ব দেওয়ায় খুশি।'
বিধায়কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ:
সম্প্রতি ভগবানগোলার তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিশ আলির বাড়িতে চড়াও হন এলাকার বেশ কিছু তৃণমূল নেতা-কর্মী। তাণ্ডব চালানো হয় তাঁর বাড়িতে। টাকার বিনিয়মে দলীয় পদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ইদ্রিশ আলির বিরুদ্ধে। দলের অঞ্চল সভাপতি, ব্লক সভাপতি করার জন্য টাকা নিয়েছেন ইদ্রিশ আলি, এমনটাই অভিযোগ করেন তৃণমূল নেতার একাংশের। কারও কারও থেকে লক্ষাধিক টাকা নেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল।
তার কদিন পরেই ব্লক সভাপতি পদে একজনকে আনল নেতৃত্ব। তারপরেও অবশ্য পিছু ছাড়ল না বিক্ষোভ।