করুণাময় সিংহ, রতুয়া: কোনও বিরোধী দলনেতার উষ্মাপ্রকাশ নয়। তৃণমূল সরকারের প্রশাসনের বিরুদ্ধে বন্যাত্রাণ বণ্টনে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে সরব হলেন তৃণমূল বিধায়ক।
মালদা জেলা প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। বললেন, প্রশাসনের ভূমিকা আমি ভাল দেখছি না। প্রশাসন আমাকে বলছে, এমন বন্যা তো কতই হয়। আমি খুব লজ্জিত এবং দুঃখিত। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করব।
টানা বৃষ্টি, সঙ্গে নদীর জলস্তর বাড়ায়, মালদার রতুয়া এক নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত। মহানন্দা টোলা, বিলাইমারির মতো অঞ্চলে এখনও ত্রাণশিবিরে রয়েছেন বহু দুর্গত মানুষ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গঙ্গা ও ফুলহার নদীর জলস্তর বাড়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। জল ঢুকেছে পঞ্চায়েত অফিসে। জল ঢুকে পড়েছে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এটাই সবচেয়ে উঁচু এলাকা। সেখানেই জল। গঙ্গা ও ফুলহারের জলস্তর বৃদ্ধির ফলে জলমগ্ন পুরো এলাকা।
সাধারণ গ্রামবাসী থেকে পঞ্চায়েত প্রধান, সরকারি ত্রাণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন সবাই। একজন বললেন, আমাদের চারদিকে জল ঢুকেছে। এখনও ত্রিপল পাইনি। বাড়িতে জল ঢুকেছে। কোথায় যাব কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।
বিলাইমারি গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান তথা তৃণমূল নেতা লুৎফর রহমান বলেন, আমাদের এখানে প্রচুর লোক বাস করে। আমার কাছে এসেছে যৎসামান্য ত্রাণ। মানুষ ত্রাণের জন্য ঘোরাঘুরি করছে। বিডিওকে ত্রাণের জন্য বলেছি।
এই পরিস্থিতিতে বন্যা ত্রাণ বণ্টনে উদাসীনতার অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলেছেন রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক। সমর মুখোপাধ্যায় বললেন, প্রশাসনের ভূমিকা আমি ভালো দেখছি না। প্রশাসন আমাকে বলছে এমন বন্যা তো কতই হয়। আমি খুব লজ্জিত এবং দুঃখিত। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করব। জ্যোতিবাবু একটা খুন হলে বলতেন, এমন তো অনেক হয়। মহানন্দ টোলা বিলাইমারিতে ৮০ থেকে ৯০ হাজার পরিবার জলমগ্ন। কোথাও শুকনো নেই। জ্যোতিবাবুর ভাষায় প্রশাসন বলছে এমন তো বন্যা অনেক হয়।
প্রশাসনের বিরুদ্ধে খোদ তৃণমূল বিধায়কের আক্রমণকে হাতিয়ার করে শাসক দলকে নিশানা করেছে বিজেপি। দলের মালদা জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বিধায়ক নিজের পিঠ বাঁচাতে প্রশাসনের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।
তৃণমূল বিধায়কের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলাশাসকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এবিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।