করুণাময় সিংহ, মালদা: হরিশ্চন্দ্রপুরে (Harischandrapur) তৃণমূলের (Trinamool) পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাল বাম-কংগ্রেস। তাদের দাবি, বন্যাত্রাণ থেকে ১০০ দিনের কাজ, একাধিক সরকারি প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
২০১৪ সালে ‘বন্যাত্রাণের টাকা মেলেনি’। ১০০ দিনের কাজে ব্যাপক ‘দুর্নীতি’ হয়েছে। দুটি ক্ষেত্রেই ‘লুঠ হয়েছে সরকারি কোষাগারের টাকা’। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে এমনই জোড়া অভিযোগে বুধবার মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে একযোগে আন্দোলনে নামল বাম ও কংগ্রেস।
এদিন হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক অফিসের সামনে সকাল ১১টা নাগাদ বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের দাবি, রাজ্যের শাসকদল ও প্রশাসনের একাংশের যোগসাজশে দুর্নীতি হয়েছে। এমনকি সরকারি প্রকল্পের টাকা কাদের দেওয়া হয়েছে, সেই তথ্য পেতে RTI করলেও তা জানানো হয়নি!
প্রসঙ্গত মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের সবকটি গ্রাম পঞ্চায়েতই তৃণমূলের দখলে রয়েছে। যদিও বিরোধীদের তোলা সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাসকদল। মালদার তৃণমূল মুখপাত্র শুভময় বসুর কথায়, সরকারি ওয়েবসাইটে সবার নামের তালিকা দেওয়া থাকে। তারপরেও কেউ আবেদন করলে করতে পারে। সব ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
সম্প্রতি হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকে তৃণমূল পরিচালিত বোরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ ২ জনের বিরুদ্ধে বন্যাত্রাণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও হয়। সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন করেন অভিযুক্তরা। সেই আবেদন খারিজ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। তারপরই আত্মসমর্পণ করেন অভিযুক্তরা।
কিছুদিন আগেই মালদায় প্রায় কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে পঞ্চায়েত প্রধানের (Panchayet) বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছিল মালদার (Malda) চাঁচল (Chanchol) ২ ব্লকের চন্দ্রপাড়ায়। অভিযোগ, ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ না করেই প্রায় কোটি টাকা তছরূপ করেছেন তিনি। আত্মসাতের অভিযোগে সরব হয়েছেন পঞ্চায়েতের উপপ্রধানসহ অন্যান্য সদস্যরা। বিডিওর কাছে ইতিমধ্যেই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান চম্পা সরকার। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন বিডিও।
বিডিওর কাছে দায়ের করা অভিযোগপত্রে পঞ্চায়েতের সদস্যরা জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতের তৃণমূল (TMC) কংগ্রেসের প্রধান চম্পা সরকার দীর্ঘদিন ধরে এলাকা উন্নয়নের কোনও কাজ করেন না। এর পর ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের বেশ কিছু রাস্তা ও কলাচাষের কোনও কাজ না করেই প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। অভিযোগকারীরা আরও জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতের অন্যান্য সদস্যদের কিছু না জানিয়েই সমস্ত কাজ করে ফেলেন প্রধান। অবিলম্বে তদন্ত করে ওই প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে অভিযোগপত্রে।
ঘটনায় অন্যতম অভিযোগকারী পঞ্চায়েতের তৃণমূল (TMC) কংগ্রেসের উপপ্রধান কমলিকা থোকদার বলেন, 'চম্পা সরকার একাধিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। কলা বাগানের স্কিমে তিনি প্রায় ৮৭ লক্ষ টাকা তছরুপ করেছেন। কোথাও একটিও কলাগাছ লাগানো হয়নি। উপভোক্তাদের অনেকে জানেনই না, এই প্রকল্পে তাঁদের নাম রয়েছে।