করুণাময় সিংহ, মালদা: মালদা মেডিক্যালের (Malda Medical College and Hospital) অধ্যক্ষ থেকে সহকারী সুপার, হাসপাতালে কেউই তিন দিনের বেশি কাজে আসেন না। তাঁরা সরকারের থেকে বেতন নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে (Private Hospital) রোজগার বাড়ান। বাম চিকিৎসক সংগঠনের প্রসঙ্গ টেনে তীব্র আক্রমণ নির্মল মাজির (Nirmal Maji)। পাল্টা জবাব দিয়েছে সিপিএম। মন্তব্যে নারাজ চিকিৎসকরা।
বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান নির্মল মাজি বলেন, "তোমরা সপ্তাহে দু’দিন দুঘণ্টা করে ডিউটি করে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়বে পাশে পাশের নার্সিংহোমে হইহই করে, আর ৪দিন কলকাতায় খেপ খাটবে, এই জিনিস বাংলার মানুষ বরদাস্ত করবে না।"
কোথায় এই 'নির্মল বার্তা'?
ফের বিতর্কে তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা নির্মল মাজি। এবার শাসক দলের এই হেভিওয়েট বিধায়কের নিশানায় মালদা মেডিক্যালের অধ্যক্ষ ও ৬ জন সহকারী সুপার। রবিবার ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রোগ্রেসিভ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের মালদা শাখার সম্মেলন থেকে চিকিৎসকদের একাংশকে নিশানা করলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান নির্মল মাজি।
কী বলেছেন তৃণমূল বিধায়ক তথা চিকিৎসক?
নির্মল মাজি বলেন, "আসি, যাই, মাইনে পাই - এর এই যে পথ পরিক্রমা, বিশেষ করে মালদায় এটা দেখছি প্রকটিত হয়েছে। মালদায় প্রিন্সিপাল সুপার ৩ দিনের বেশি আসেন না! বেশ কিছু সিপিএমের জমানার হার্মাদ আর হেলথ সার্ভিস অফ ডক্টর্স, সিপিএমের চিকিৎসক সংগঠনের নেতারা, যাঁরা এখানে পরবাসে আছেন, পরভূমে আছেন, তাঁরা আসার প্রয়োজনও মনে করেন না।"
এদিকে এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, "ছুটিতে থাকায় কাল হাসপাতালে ছিলাম না। আজকেও ছুটিতে আছি। অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারদের রোস্টার অনুযায়ী ডিউটি হয়। উনি তাঁদের সম্বন্ধেও অভিযোগ করেছেন।"
আরও পড়ুন, 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চাই না, বাঁধ চাই', অশনি শঙ্কায় অসহায় আর্তি নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের
এই ঘটনা নিয়ে সিপিএমের মালদার জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, "ওনার বিষয়ে মন্তব্য করতে ইচ্ছা করে না। কারণ উনি কী কী করেছেন তা সবাই জানে। ওনাদের সরকার ১১ বছর ক্ষমতায়। তারপরেও সিপিএমের ভূত দেখছেন।"
নির্মল মাজি এও বলেন, "অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার ৬ জন আছেন। ৬ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারই কাজ করেন না। সব হাসপাতালে কলকাতা সহ পিজি, মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস, আরজি কর, রাউন্ড দ্য ক্লক অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপাররা ডিউটিতে থাকেন ৮ ঘণ্টা করে। এখানে কোনও অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারকে আজকে আমি খুঁজে পাইনি। রবিবার গয়ংগচ্ছ ভাব। পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা। এখানে একটা নো ম্যানস্ জোন।"
তৃণমূলের দাপুটে চিকিৎসক নেতা নির্মল মাজির অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মালদা মেডিক্যাল কলেজের সহকারী সুপার পল্লবী বিশ্বাস। একই প্রতিক্রিয়া মিলেছে আরেক সহকারী সুপার সামাউন মন্ডলের কাছ থেকে।