করুণাময় সিংহ,মালদা: মালদার গাজোলের মাছ ব্যবসায়ী জয় প্রকাশ সাহাকে (Malda Businessman) ১২ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ। ইতিমধ্যেই ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে সিআইডি । সিআইডি সূত্রে দাবি, উদ্ধার হওয়া টাকা ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে মাদক কারবারে হস্তান্তরের পরিকল্পনা ছিল। এমনকি এই ঘটনায় ধৃত মাছ ব্যবসায়ী ছাড়াও ৩ জন। যাদের মধ্যে দুই জন মালদার বাসিন্দা। তৃতীয়জন দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা। এই গঙ্গারামপুর থেকে গ্রেফতার হন জয়প্রকাশের শ্যালকও।
মালদার গাজোলের মাছ ব্যবসায়ী জয়প্রকাশ সাহাকে গতকাল মালদা জেলা আদালতে পেশ করে সিআইডি। মালদা জেলা আদালতে ধৃতকে তোলা হলে সিআইডি-র আইনজীবী দাবি করেন, জয়প্রকাশ সাহার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার সঙ্গে সরাসরি মাদক যোগ রয়েছে। জড়িত রয়েছে বেশ কয়েকজন। এই যুক্তি দেখিয়ে ধৃতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত চাওয়া হয় সিআইডি-র পক্ষ থেকে। এর বিরোধিতা করে ধৃতের আইনজীবী দাবি করেন, উদ্ধার হওয়া টাকার সঙ্গে মাদকের কোনও যোগাযোগ নেই। তাই জয়প্রকাশকে জামিন দেওয়া হোক। দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর ১২ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। যদি এই ঘটনার প্রকাশ্যে আসতেই, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, 'এটা দেখা তো বিএসএফ-র দায়িত্ব।' পাল্টা বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, 'এখানে পুলিশের ভূমিকাটা খতিয়ে দেখা দরকার।'
বিপুল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় আরো তিনজনের নাম জানতে পেরেছে তদন্তকারী আধিকারিকেরা। সিআইডি সূত্রে খবর, জয়প্রকাশ সাহার বাড়ির পাশে এক গ্রামীণ চিকিৎসকের ওষুধের দোকান রয়েছে। মাদক পাচারে তার ভূমিকাও তদন্ত করে দেখছেন সিআইডি আধিকারিকেরা। মালদায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে টাকার পাহাড়। ইতিমধ্যেই ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে সিআইডি । রবিবার সেই ছবি দেখে কার্যত চক্ষচড়ক গাছ। দীর্ঘ সময় চলে টাকা গোনার কাজ। টাকার অঙ্ক আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কোথা থেকে এল এত টাকা? নেপথ্যে কী? তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। মাছ ব্যবসার আড়ালে কি মাদকের কারবার? রবিবার সকালে গাজোলের ঘাকশোলে মাছ ব্যবসায়ী জয়প্রকাশ সাহার বাড়িতে হানা দেন রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি-র অফিসাররা। সিআইডি সূত্রে দাবি, সম্প্রতি মাদক মামলায় গ্রেফতার হন ব্যবসায়ীর আত্মীয়, দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা ওম গুপ্ত।নিষিদ্ধ কাফ সিরাপ পাচারের সঙ্গে যুক্ত মাছ ব্যবসায়ী জয়প্রকাশ সাহা , এমনটাও দাবি করেছে সিআইডি।
আরও পড়ুন, ফের রেল অবরোধ হুগলির খন্যানে, চরম দুর্ভোগ অফিস যাত্রীদের
প্রসঙ্গত, অপরদিকে, গরুপাচার মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমের হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। শোনা যায়, তিনি একসময় ছিলেন মাছ বিক্রেতা। হাটে মাগুর মাছ বিক্রি করতেন বলেই দাবি এলাকাবাসী। কীভাবে তিনি সেখান থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হলেন, তা নিয়ে চোখ কপালে অনেকেরই।ইতিমধ্যেই অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর আত্মীয়দের ১৬ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট ফ্রিজ করেছে সিবিআই। অনুব্রত মণ্ডলের থেকে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে, ১৭ কোটির এই এফডি-র টাকার উৎস কী, গরু পাচারের টাকা দিয়েই কি ফিক্সড ডিপোজিট করা হয়েছে ? অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর আত্মীয়দের কোথায় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ? অপরদিকে, অনুব্রত মন্ডল ও তাঁর আত্মীয়দের প্রায় ১৭ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট ফ্রিজ করার পর, সিবিআইয়ের নজর দেয় বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।