করুণাময় সিংহ, রতুয়া: রতুয়ায় আরও প্রকট তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। রতুয়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অপসারণ নিয়ে প্রকাশ্যে দলের বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন অপসারিত সভাপতি আবিদা বেগম এবং রতুয়া ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি ফজলুর হক।


যদিও এই বিষয়ে মন্তব্যে নারাজ রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সমর মুখোপাধ্যায়। গোটা ঘটনা ঘিরে অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। পুরো বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি। এই নিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।


২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে রতুয়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টি আসনের মধ্যে ২৬টি আসন দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস ও চারটি আসন পায় কংগ্রেস। কংগ্রেসের চারজন তৃণমূলে নাম লেখানোয় বিরোধী-শূন্য হয়ে পড়ে এই পঞ্চায়েত সমিতি।


তৃণমূল পরিচালিত এই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন আবিদা বেগম। বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ২৬ জনের মধ্যে ১৮ জন বিজেপিতে চলে যান। কিন্তু ভোট পর্ব মিটতেই তাঁরা ফিরে আসেন তৃণমূল কংগ্রেসে। 


এরপরই দলের ১৭ জন সদস্য সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। গতকাল দলীয় সদস্যদের ডাকা অনাস্থাই অপসারিত হয়েছেন আবিদা বেগম। অপসারণের পরই স্থানীয় বিধায়ক তথা দলের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেন তিনি। বলেন, এই অপসারণের পেছনে মদত রয়েছে সমর মুখোপাধ্যায়ের। 


রতুয়া ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি ফজলুর হক অভিযোগ করেন, দলে আসার আগে যে সমস্ত পঞ্চায়েত গঠন করা হয়েছিল সমস্ত পঞ্চায়েত ভেঙে দিয়ে নতুন ভাবে গঠন করাচ্ছেন সমর মুখোপাধ্যায়। রতুয়া ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূলের সাফল্য সমর মুখোপাধ্যায়ের জন্য নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


এদিকে, এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সমর মুখোপাধ্যায় বলেন, যে কেউ যা কিছু বলতেই পারেন তবে এই বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। 


মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি বলেন, দলগতভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি দলের প্রধান সভাপতির বিরুদ্ধে কেউ অনাস্থা ডাকতে পারবেন না। অনাস্থা ডাকলে আমরা ব্যবস্থা নেব। তিনি আরও বলেন, রতুয়া পঞ্চায়েত সমিতি নিয়ে খোঁজখবর করা হবে। প্রয়োজনে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 


তৃণমূলের এই গোষ্ঠীকোন্দলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। জেলা বিজেপির সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত হয়ে গেছে তৃণমূল কংগ্রেস। চেয়ারম্যান ও সভাপতির নিজের এলাকায় দলের হুইপ মানছেন না কর্মীরা। এরপর দল কোন জায়গায় পৌঁছাবে সেটা ভবিষ্যৎ বলবে।