করুণাময় সিংহ, মালদা: বেআইনি বালি পাচার, বেআইনি মাটি পাচার-এরকম নানা অভিযোগ এতদিন তুলেছিলেন বিরোধীরা। বেআইনি মাটি ও বালির ব্যবসায় শাসক দল এবং স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে আঁতাতের অভিযোগও উঠেছে বিরোধীদের তরফে। এবার সেই একই অভিযোগ শোনা গেল খোদ শাসকদলের বিধায়কের গলায়। মালদায় বালি মাফিয়ার দৌরাত্ম্য নিয়ে পুলিশকেই কাঠগড়ায় তুললেন তৃণমূলের বিধায়ক।
কী অভিযোগ:
রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বালি মাফিয়াকে মদত দিচ্ছে রতুয়া থানার আইসি। টাকা নিয়ে মদত দেওয়া হচ্ছে। চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ করে তাঁর দাবি, এভাবে চললে ফুলহার নদীর বাঁধ ভেঙে পড়বে। বিধায়ক জানান, তিনি জেলাশাসক, পুলিশ সুপার থেকে এডিজি-র কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। যদি তাতে কাজ না হয় তাহলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে জেলা পুলিশ। মালদার পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতির দাবি, পুলিশ কোনওরকম অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়।
মুখ খুলেছেন মন্ত্রীও:
এর আগে বেআইনি মাটি কাটার অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীও। সেটাও রতুয়া থেকেই। বুধবার রতুয়ায় ফুলহার নদীর বাঁধ মেরামতির কাজের সূচনা করেন রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। ওই অনুষ্ঠান মঞ্চেই উপস্থিত ছিলেন সমর মুখোপাধ্যায়ও। গতকাল অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই বাঁধের মাটি কাটার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। শাসকদলের নেতাদের ঘনিষ্ঠ এই পরিচয় দিয়ে বেআইনি ভাবে মাটি কাটা চলছে বলে তাঁর অভিযোগ। সেচ প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'সভাপতির মামা, প্রধানের ভাই, সভাধিপতির ভাইপো পরিচয় দিয়ে বাঁধের মাটি কেটে নিয়ে চলে যাবে, তা বরদাস্ত করা হবে না।' এমন ঘটনা রুখতে এবার থেকে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
জেলা তৃণমূলের দাবি:
এই বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তৃণমূলের মালদা জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি বলেন, 'আমি শুনলাম। নদীর পাশেই ওই বিধায়কের বাড়ি। খোঁজ নিয়ে দেখব। আমি ওনার সঙ্গে এখনই কথা বলব। মাটি কাটার কাজ ছোট ছোট জায়গায় করছে। আমরা প্রশাসনকে বলেছি। প্রশাসন তৎপরতার সঙ্গে বিষয়টি দেখছে।'
বিরোধীদের কটাক্ষ:
তৃণমূলের বিধায়ক ও মন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর বিজেপির দাবি, এতদিন তারা যে সব অভিযোগ করত, এখন শাসকদলের বিধায়ক সেই অভিযোগ করছেন।