অরিত্রিক ভট্টাচার্য, শিবাশিস মৌলিক ও অনির্বাণ বিশ্বাস: কেন্দ্রীয় সংস্থা (Central Agencies) দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে ফের অভিযোগে সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার একটি রিয়েল এস্টেট সংস্থার অনুষ্ঠানে মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, যতদিন না এই প্রতিহিংসা চরিতার্থ হচ্ছে, এই মামলা কখনও বন্ধ হবে না। কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভূমিকার পাশাপাশি ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর মুখে উঠে আসে জানলা কেনার প্রসঙ্গও। 


সোমবার ওই অনুষ্ঠান থেকে কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, "এটা শুধু আপনাদের নয়, অনেক সময় সমস্ত ব্যবসায়ীদের এজেন্সির সাহায্য়ে হেনস্থা করা হয়। আমার পরিবারকেও। যদিও জীবনে আমি চা খেতে একটা পয়সাও নিই না কারও কাছ থেকে। কিন্তু এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। ওসব নিয়ে ভাববেন না। যতদিন না এই প্রতিহিংসা চরিতার্থ হচ্ছে, এই মামলা কখনও বন্ধ হবে না।"


কোন প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার কথা বলছেন মমতা, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে। কারণ এর আগেও একাধিক বার কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মমতা। গত ২৮ অগাস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) গ্রেফতার করা হতে পারে বলে দাবি করেছিলেন।


আরও পড়ুন: WB Govt:'রাজভবনের চিঠির ভিত্তিতে কোনও কাজ নয়', রাজভবনের পাল্টা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে বিজ্ঞপ্তি সরকারের


ওই মঞ্চে মমতার বক্তব্য ছিল, "আমি অনেক সরকার দেখেছি। কিন্তু এরকম প্রতিহিংসাপরায়ন সরকার দেখিনি। আমায় কালকে একজন মেসেজ দিচ্ছে, অভিষেককে ইলেকশনের আগে গ্রেফতার করব। কেন, কী করেছে দেখেছেন তো?"

আবারও কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে হেনস্থার প্রসঙ্গ ফিরল মমতার মুখে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভূমিকার পাশাপাশি ইঙ্গিতপূর্ণভাবে মমতার মুখে উঠে এল, 'কাপ-ডিশ' এমনকি জানলা ও চেয়ারের প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, "আমি এটা বুঝি না, আপনি যদি কিছু কেনেন, এই ধরুন কাপ-ডিশ, ED কী পারে এটার তদন্ত করতে? যদি আপনি জানালা কেনেন? আর কিছু চেয়ার।"


গত ২১ অগাস্ট নিউ আলিপুরে, লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের অফিসে ম্যারাথন তল্লাশি চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এই অফিসেই কাজ করতেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু! ED-সূত্রে খবর, জেরায় তিনি জানান, তিনি এই কোম্পানির চিফ অপারেটিং অফিসার বা COO ছিলেন। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর নামে ED-যে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর কোম্পানি এসডি কনসালটেন্সি প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ৯৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের অ্যাকাউন্টে।

এর পাশাপাশি ED-র তরফে দাবি করা হচ্ছে যে, নিয়োগ দুর্নীতির মামলার তদন্তে জানা গেছে যে, মহিষবাথানে মার্লিন গ্রুপের প্রকল্পে অ্যালুমিনিয়ামের জানালা সরবরাহ করেছিল সুজয়কৃষ্ণর কোম্পানি এসডি কনসালটেন্সি। বাজার দর থেকে তিন গুণ বেশিতে এই জানালা সরবরাহ করা হয়েছিল।


ED-সূত্রে দাবি, বাজার দর থেকে বেশি টাকা নিয়ে কার্যত প্রোটেকশন মানি নেওয়া হত। লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের অফিস থেকে কাজ হত এসডি কনসালটেন্সির। এই অফিসেই মার্লিন গ্রুপের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করতেন সুজয়কৃষ্ণ। তাই মমতার মন্তব্য নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়ের বক্তব্য, "অনেক কিছু বলছেন, মনে হয় কোনও দিক নির্দেশের চেষ্টা করছেন....।"