কলকাতা : আলু চাষিদের পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার। আলুর ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ধার্য করা হল প্রতি কুইন্টালে ৯০০ টাকা। মঙ্গলবার একথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি জল ছাড়ার জন্য DVC-কে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এভাবে জল ছাড়ায় আলু চাষিদের ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আলু কেনার জন্য আমরা একটা MSP রেট বা মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইস বলি, আমরা প্রতি কুইন্টালে ৯০০ টাকা করেছি আলু চাষিদের জন্য। এটা তাঁদের অভাবি সেল বন্ধ করতে সাহায্য করবে। মাঝে একটু বৃষ্টি হয়েছে। ডিভিসি-কে জল ছাড়তে বারণ করা হয়েছিল, তা সত্ত্বেও ছেড়েছে। সেইজন্য খেতে যে আলু ভিজে গেছে, আমাদের সরকার তার অনেকটাই কিনে নিয়েছে। আমরা এগুলো সুফল বাংলায় বিক্রি করে দেব। তাছাড়াও যেগুলো ক্ষতি হয়েছে, সেগুলো শস্যবিমার মাধ্যমে কভার হবে। সেখানে আমাদের চাষিদের ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৩২১ কোটি টাকা দিতে হবে। যাতে তাঁরা কোনও অভাব অনুভব না করেন, সমস্যায় না পড়েন।"
প্রসঙ্গত, চাষের জন্য ছাড়া ডিভিসির জলের চাপে গত শনিবার হুগলির বলাইচক এলাকায় চিংড়া খালের বাঁধ ভেঙে হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে। হুগলির কিছু অংশ ভাসায় এবং তারপর সেই জল হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে ঢুকে আলুর খেত নষ্ট করে দিয়েছে। ইতিমধ্যে ৭০০ বিঘা জমির আলু নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন চাষিরা। এই পরিস্থিতিতে সোমবার থেকে হুগলির বলাইচকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। ফলে, নতুন করে প্লাবনের আশঙ্কা কমেছে। কিন্তু যে জলটা উদয়নারায়ণপুরে জমে ছিল সেই জল ক্রমশ নীচের দিকে নামছে।
ডিভিসির ছাড়া জলে কার্যত 'অকাল বন্যা' হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে। যার জেরে আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতির মুখে চাষিরা। কার্যত তাঁরা এখন নাওয়া-খাওয়া ভুলতে বসেছেন! কেউ ধার করে, কেউ জমানো টাকা ভেঙে আলু চাষ করেছিলেন। কিন্তু, নদীর বাঁধ ভেঙে হাওড়া এবং হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে। তার জেরে অসহায় অবস্থা এখন বহু চাষির। জমা জল ক্রমশ নীচের দিকে দক্ষিণ উদয়নারায়ণপুরের আরও দু'টি গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু কিছু জমি প্লাবিত করছে। মানশ্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু জমি ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে এবং ভবানীপুর সোনাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতেও কিছু জমিরও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে, নতুন করে আরও ৫০০-৭০০ বিঘা জমি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।