গোপাল চট্টোপাধ্যায় ও সোমনাথ মিত্র, কলকাতা: টাটারা চলে যাওয়ার ফলে শিল্পের ক্ষতির আক্ষেপও আজ ঝরে পড়ছে সিঙ্গুরের (Singur) বাসিন্দাদের গলায়। দেউচা পাচামির (Deucha Pachami) জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প ঘোষণার পর সেই আক্ষেপ, আর্তি আরও একবার উঠে এল সিঙ্গুরের চাষীদের গলায়। শিল্প হয়নি সেখানে। চাষও হয় না আর সেইসব জমিতে। পড়েই রয়েছে বিঘার পর বিঘা জমি। বর্তমান সরকারের কাছে সিঙ্গুরের চাষীদের আর্তি, কারখানা সিঙ্গুরে হোক, এই জমি বেকার পড়ে আছে !! সিঙ্গুরের তৎকালীন আন্দোলনকারী কৃষক প্রভাস ঘোষ জানালেন, চাষবাস হচ্ছে না...পরিষ্কার করেনি। আক্ষেপ ঝরে পড়ছে গলায়। 


সিঙ্গুরের আরেক কৃষক শক্তিপদ মুখোপাধ্যায়েরও দাবি, 'হাজার হাজার ছেলে-মেয়ে বেকার, সিঙ্গুরে অনেকে বেকার, এখানে শিল্প হলে ভাল হয়।' 


একদিন যে সিঙ্গুর থেকে টাটাদের চলে যেতে হয়েছিল, আজ সেই সিঙ্গুরও চাইছে কারখানা। প্রায় দেড় দশক আগে, জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়েছিল সিঙ্গুর! সেই স্মৃতি এখনও টাটকা সেখানকার মানুষের মনে। 
মঙ্গলবার, দেউচা পাচামির জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে, প্যাকেজ ঠিক করার দাবি স্থানীয়দের একাংশের। আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দাবি অনুব্রত মণ্ডলের। সেইসব শুনে সিঙ্গুরেও শিল্পের দাবি স্থানীয়দের।

আরও পড়ুন :


ফের রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত, বাংলায় শিল্পে লগ্নি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি ধনকড়ের


সেই সময় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ( Buddhadeb Bhattacharjee ) বলেন, কৃষি হবে আমাদের ভিত্তি, শিল্প হবে আমাদের ভবিষ্যৎ, সেই পথে এগোতেই হবে। সিঙ্গুরের মাটি থেকে শিল্পের স্লোগান তুলেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আর তারপর সেই সিঙ্গুরই বাম শাসনের পতনের, এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মহাকরণে আসীন হওয়ার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ, কর্মসংস্থানের আশ্বাস, এতকিছুর পরও, জমি আন্দোলনের জেরে ন্যানো গাড়ির প্রকল্প গুটিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে টাটাদের। মঙ্গলবার, বীরভূমের দেউচা পাচামিতে কয়লা খনির জন্য জমি অধিগ্রহণের ঘোষণা করতে গিয়েও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে উঠে এল সেই সিঙ্গুরের প্রসঙ্গ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মনে রাখবেন সিঙ্গুর যেভাবে অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, আমরা সেভাবে করব না।

বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকে সাড়ে ৩ হাজার একর জমি নিয়ে এই কয়লা খনি হওয়ার কথা। তার মধ্যে, রাজ্য সরকারের হাতে রয়েছে ১ হাজার একর জমি। বাকি অংশে রয়েছে আদিবাসী গ্রাম, পাথর খাদান ও চাষের জমি।এখানকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই পুনর্বাসন প্যাকেজ ঠিক করতে হবে সরকারকে।