কলকাতা: বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবসে ফের বাঙালি আবেগে শান মুখ্যমন্ত্রীর। পোস্টে বিজেপিকে নিশানা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, যাঁরা বাংলা ও বাঙালিকে আক্রমণ করছে, তারাই ঈশ্বরচন্দ্রের মূর্তি ভেঙেছিল। এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপিও। 

বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনের আঁচ যেমন পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্য়েই এসে পড়েছে, তেমনই বিধানসভা নির্বাচনে বড় ইস্য়ু হতে চলেছে বাঙালি আবেগও। যাকে হাতিয়ার করতে উঠেপড়ে লেগেছে তৃণমূল। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবসকে সামনে রেখে ফের বাঙালি আবেগে শান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এক্স হ্যান্ডলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, বিদ্যাসাগর আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের গর্ব। বাংলা তথা ভারতে শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অবদান এবং নারীর অবস্থার উন্নতির জন্য তাঁর লড়াই আমরা কখনও ভুলতে পারব না।  আমরা আজ যা, তা অনেকটাই তাঁর অবদান, সেই বর্ণপরিচয় থেকে যার শুরু। আজ যখন দেশজুড়ে বিজেপির নেতৃত্বে বাংলা ভাষা ও বাঙালির ওপর আক্রমণ শুরু হয়েছে, তখন এই মহামনীষীর জীবন, শিক্ষা ও দর্শন আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। যারা আজ বাংলা ও বাঙালিকে আক্রমণ করছে,তারাই বিদ্যাসাগরের দ্বিশতবর্ষে কলকাতায় বিদ্যাসাগর কলেজে তাঁর মূর্তি ভেঙেছিল। আমরা সেই মূর্তি পুনঃস্থাপন করেছি।

এবিষয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন,  "যাঁরা ঘৃণ্য রাজনৈতিক স্বার্থে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে রাজনীতি করেছিল তাঁরা এখন বড় বড় কথা বলছেন। এতদিন বিদ্যাসাগরকে কি স্মরণ করেছেন? কত জন্মদিবস, কত প্রয়াণ দিবস চলে গেছে। বিদ্যাসাগরের তো নাম নেননি। আর বিদ্যাকে তো আলু পেঁয়াজের মতো বিক্রি করে ফুটপাতে বসিয়ে দিয়েছেন। রাস্তায় বসে আছে বিদ্যা।'' 

ভিন রাজ্য়ে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার প্রতিবাদে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেই ভাষা আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। সেইমতো রবিবারই কলকাতা থেকে জেলা একের পর এক প্রতিবাদ কর্মসূচি সংগঠিত করে তৃণমূল। আর সোমবার রবি ঠাকুরের মাটি থেকে প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু করেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। বোলপুরের ট্যুরিস্ট লজ মোড় থেকে জামবুনি বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার পথ পদযাত্রা করেন তিনি। তৃণমূলনেত্রী বলেন, "শুনুন আমি কোনও ভাষার বিরুদ্ধে নই।আমি কোনওদিন কোনও হিন্দিভাষীকে বলেছি, যে তুমি বাংলা ছেড়ে চলে যাও। যদি বাংলা বলার কারণে দিল্লিতে অত্য়াচার হয়, রাজস্তানে অত্য়াচার হয়, উত্তরপ্রদেশে অত্য়াচার হয়, মধ্যপ্রদেশে হয়, গুজরাতে হয়, অসমে হয়, তাহলে ...আপনিও আপনার কমিউনিটি থেকে সরব হন। যে যদি আমাদের বাংলায় দেড় কোটি পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করেন তাহলে বাংলার ২২ লক্ষ কেন বাইরে কাজ করে, তুমি তাদের উপর অত্য়াচার বন্ধ করো। ওদের উপর অত্য়াচার বন্ধ করো। আমরা যদি সবাইকে আশ্রয় দিতে পারি তোমরা কেন পারো না?''